কলকাতা: এই মুহূর্তে উত্তর বঙ্গের বন্যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিস্তর বাদানুবাদ। এ বলছে আমায় দেখ ও বলছে আমায়। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের গতকালের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রসিকতা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার মমতা বলেন বন্যার কারণ শুধু মাত্র ভূমি ধস এবং তার সঙ্গে ভুটান থেকে আসা অতিরিক্ত জল। মমতা বলেন ভূমি ধসের জন্য অবিলম্বে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ লাগাতে হবে।
দীপাবলিতে প্রিয়জনকে সোনা উপহার দিচ্ছেন? আগে জেনে নিন করের নিয়ম
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই শুভেন্দু বলেছেন “আমাদের ইস্ট জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি প্রাপ্ত ‘মূর্খ মন্ত্রী’ ভূগোল ও বোটানিতে (উদ্ভিদবিদ্যায়) নোবেল পুরস্কার পাবেন, ওনার ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী প্রচেষ্টার জন্যে – পাহাড়ে ম্যানগ্রোভ। শুভেন্দু যুক্তি সহকারে বলেছেন ম্যানগ্রোভ বা লবণাম্বু উদ্ভিদ একটি বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ যা সাধারণত সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনা জলে জন্মায়।
ম্যানগ্রোভ বন বা বাদাবন হলো প্রকৃতির এক অতুলনীয় রক্ষাকবচ, যার ভূমিকা উপকূল রক্ষা, জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অপরিসীম। এ যেন উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর জন্য একপ্রকার জীবন্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই অনন্য বাস্তুতন্ত্র সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস, ঝড়ঝঞ্ঝা, ঘূর্ণাবর্ত এবং অন্যান্য সামুদ্রিক সমস্যা থেকে উপকূলীয় এলাকা কে সুরক্ষিত রাখে।
আর এই কর্দমাক্ত নোনা জলাভূমি হলো বহু পোকামাকড়, মাছ, সরীসৃপ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর আবাস। শুভেন্দু আরও বলেন “মাননীয়ার ইচ্ছে হয়েছে পাহাড়ে ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ করে বন্যা রোধ করবেন! পশ্চিমবঙ্গের কবে যে হাল ফিরবে, আমাদের রাজ্য ওনার কারণে সারা দেশের সামনে হাস্যাস্পদ হয়ে যাচ্ছে।”
শুধুই শুভেন্দু নয় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে টনক নড়েছে সাধারন মানুষেরও। হঠাৎ করে এই ধরণের বিবৃতি শুনে প্রথমটায় সবাই একটু চমকে উঠলেও পরে তারা ভেবে দেখেন এবং এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন ম্যানগ্রোভ অরণ্য শুধুমাত্র উপকূলীয় লবনাক্ত মাটির জন্য। পাহাড়ি মাটির জন্য ম্যানগ্রোভ অরণ্য বক্তব্যের মধ্যে অভিনবত্ব থাকলেও তাতে শিক্ষার ছাপ নেই। তারা আরও বলেছেন এই বন্যার কারণ ভূমি ধস বা মাটি আলগা হয়ে যাওয়া।
সারা বছর সরকারের বদান্যতায় থাকা চোরা কারবারিরা পাইন, বার্চ, ওক, শাল, সেগুনের গাছ কেটে চোরা পথে তা অন্য দেশে পাচার করে দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মাননীয়া কিছু বলবেন কি ? আর উত্তর হোক বা দক্ষিণ প্রোমোটার রাজ সব জায়গায় যে গাছ গুলি মাটি ধরে রেখে বন্যার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকাতে পারে সেগুলো কেটে ফেলে বাড়ি তৈরী করে ফেলছে সে বিষয়ে মমতা সরকার মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন?
এমনও প্রতিক্রিয়া এসেছে তাদের কাছ থেকে। তবে ম্যানগ্রোভ অরণ্য কবে হবে পাহাড়ে তার ঠিকানা হয়তো কারুর কাছেই নেই। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এবং তার চারপাশে ঘুরে বেড়ানো স্তাবকদের যে আরও পড়াশুনা প্রয়োজন সে ব্যাপারে নিশ্চিত। এমনই প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে মানুষের কাছ থেকে।