মৈথিলী জিতলেই আলীনগর হবে সীতা নগর

maithili-thakur-alinagar-election-results-live

দ্বারভাঙা: বিহারের ভোট গণনার মাঝে একটা নাম যেন আলাদা করে ঝলমল করছে তিনি মৈথিলী ঠাকুর। মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিজেপির টিকিটে আলীনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লড়ছেন এই তরুণী, আর এই মুহূর্তে তিনি ১১,০৮২ ভোটের বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী জেডিইউ-এর বর্ষীয়ান নেতা রমেশ চৌধুরীকে পিছনে ফেলে মৈথিলী যেন মিথিলার মেয়ে সীতার মতোই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন।

Advertisements

আর তাঁর জয়ের সঙ্গে জুড়ে আছে একটা স্বপ্নের প্রতিশ্রুতি জিতলেই আলীনগরের নাম বদলে ‘সীতা নগর’ করবেন তিনি। এই ঘোষণা রাজ্যের রাজনৈতিক আলোচনায় নতুন রং যোগ করেছে।সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই আলীনগর কেন্দ্রের দিকে সবার চোখ। প্রথম রাউন্ডেই মৈথিলী ২,৮৪৩ ভোটে এগিয়ে যান। দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে ব্যবধান ৫,৬৭১। আর পঞ্চম রাউন্ডের পর (দুপুর ১২:৩০) তা পৌঁছে যায় ১১,০৮২-এ।

   

বিহার ভোট গণনায় NDA-র প্রভাব, ‘বাহুবলি’ প্রার্থীরা বাড়িয়ে দিচ্ছেন চাপ!

মোট ১৮টি রাউন্ডের মধ্যে ১২টি শেষ, আর বাকি রাউন্ডগুলোতেও মৈথিলীর লিড অটুট। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, তিনি এখনও পর্যন্ত ৬৮,৪৫৬ ভোট পেয়েছেন, যেখানে রমেশ চৌধুরী পেয়েছেন ৫৭,৩৭৪। তৃতীয় স্থানে থাকা আরজেডি প্রার্থী সুধীর যাদব মাত্র ১৮,৯২১ ভোটে আটকে।মৈথিলী কে? দ্বারভাঙার স্থানীয় বাসিন্দা, মিথিলা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক। তাঁর বাবা রাজেন্দ্র ঠাকুর একসময় আরএসএস-এর সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

Advertisements

মাত্র ২১ বছর বয়সে গ্রাম পঞ্চায়েতের মুখিয়া নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন মৈথিলী। তারপর থেকে ‘মিথিলার মেয়ে’ হিসেবে পরিচিতি। বিজেপি এবার তাঁকে ‘যুব প্রতীক’ হিসেবে তুলে ধরেছে। প্রচারে তিনি বলেছিলেন, “আমি বয়সে ছোট, কিন্তু স্বপ্নে বড়। আলীনগরকে সীতা নগর করব, কারণ এই মাটিতে সীতার জন্ম। মিথিলার গৌরব ফিরিয়ে আনব।”

‘সীতা নগর’ প্রতিশ্রুতির পিছনে ইতিহাস আছে। রামায়ণ অনুসারে, জনকপুর (বর্তমানে নেপাল সীমান্তের কাছে) সীতার জন্মস্থান, কিন্তু মিথিলা অঞ্চলের অনেকে দাবি করেন, আলীনগরের কাছে ‘সীতাকুণ্ড’ এবং ‘জানকী মন্দির’ই সীতার আসল জন্মভূমি। মৈথিলী প্রচারে বলেছেন, “আলীনগরের নাম বদলে সীতা নগর করলে পর্যটন বাড়বে, কর্মসংস্থান হবে। মিথিলার সংস্কৃতি বিশ্বে ছড়াবে।” এই প্রতিশ্রুতি গ্রামীণ মহিলাদের মনে দাগ কেটেছে।

৫৫% মহিলা ভোটারের এই কেন্দ্রে মৈথিলীর ‘নারী শক্তি’ বার্তা কাজে লেগেছে।প্রচারের সময় মৈথিলীকে দেখা গেছে সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরতে। তাঁর স্লোগান ছিল “যুবতীর হাতে যুব বিহার”। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সম্রাট চৌধুরী, তারকা প্রচারক স্মৃতি ইরানি সবাই তাঁর পক্ষে প্রচার করেছেন। স্মৃতি বলেছিলেন, “মৈথিলী বিহারের ভবিষ্যত। ও যদি জিতে, বিহারে নতুন যুগ শুরু হবে।” অন্যদিকে, জেডিইউ-এর রমেশ চৌধুরী ‘অভিজ্ঞতা’র দোহাই দিয়ে লড়েছেন। কিন্তু মৈথিলীর তরুণ উদ্যমের কাছে তাঁর প্রচার ফিকে পড়ে গেছে।