লাদাখের ক্ষোভে কার্গিলির বিস্ফোরণ! কাঠগড়ায় বিজেপি

ladakh-anger-boiling-point-kargili-claims-existence-in-danger

লাদাখ: হিমালয়ের নিঃশব্দ উপত্যকা আজ উত্তপ্ত। একসময় যে অঞ্চলকে “শান্তির ভূমি” বলা হতো, আজ সেখানে ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষোভ, বঞ্চনা আর বাঁচার লড়াইয়ের স্লোগান। কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের সদস্য সাজ্জাদ হুসেন কারগিলি এক বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারে বলেন, “লাদাখের মানুষ আজ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই লড়ছে। বিজেপি আমাদের রাজ্যের মর্যাদা আর ষষ্ঠ তফসিলের অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ভেঙে দিয়েছে।”

Advertisements

২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরকে দুই ভাগ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পর থেকেই লাদাখবাসীর দাবি ছিল স্বাধীন রাজ্যের মর্যাদা ও সাংবিধানিক সুরক্ষা। কিন্তু ছয় বছর কেটে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ পায়নি। সাজ্জাদ কারগিলির অভিযোগ, “আমাদের রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, স্থানীয় জনগণ এখন নিজের ভূমিতে পরবাসী।”

   

ভারতীয় সংস্থার বড় সাফল্য, আন্তর্জাতিক অভিযানে গ্রেফতার দুই শীর্ষ গ্যাংস্টার

তিনি আরও বলেন, “যখন আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, তখন সরকার আমাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে। আমাদের দাবি শুধু রাষ্ট্রের মর্যাদা নয়, আমাদের সংস্কৃতি, জমি, ও পরিবেশ রক্ষার অধিকার।” সোনম ওয়াংচুকের গ্রেফতার প্রসঙ্গে সাজ্জাদ কারগিলি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।

তাঁর দাবি, “এই গ্রেফতার রাজনৈতিকভাবে পরিকল্পিত। যিনি লাদাখের পরিবেশ ও জনগণের অধিকার নিয়ে লড়ছেন, তাঁকে চুপ করানোর চেষ্টা হচ্ছে।” ওয়াংচুকের আন্দোলনকে তিনি “সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক” বলে ব্যাখ্যা করেন এবং বলেন, “এটি কোনো দলীয় আন্দোলন নয়, এটি লাদাখবাসীর আত্মার আন্দোলন।”

Advertisements

কারগিলি বলেন, সাম্প্রতিক প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, প্রশাসন ভয় পাচ্ছে লাদাখের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বরকে। “আমরা লাদাখের অধিকার চাই, স্বাধীনতা নয়। কিন্তু আমাদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে যদি দমন করার চেষ্টা হয়, তাহলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে,” সতর্ক করেন তিনি।

লাদাখের মানুষ এখন বলছেন, তাঁদের সংগ্রাম শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, এটি অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ। জলবায়ু পরিবর্তন, জমির বেসরকারিকরণ ও প্রশাসনিক একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ এই তিনের চাপে লাদাখবাসী আশঙ্কা করছেন তাঁদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিচয় ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে।সাজ্জাদ কারগিলি বলেন, “আমাদের কাছে এখন একটাই বিকল্প ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের অধিকার দাবি করা। এই আন্দোলন থামবে না যতক্ষণ না লাদাখ নিজের সাংবিধানিক মর্যাদা ফিরে পায়।”

স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, লাদাখের এই ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ যদি সরকার গুরুত্ব সহকারে না নেয়, তবে এটি আগামী মাসগুলোতে বড় রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠবে। কারণ এখানে শুধু রাজনীতি নয়, এক জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বই প্রশ্নের মুখে। আমাদের আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত, কোনো বাহ্যিক প্রভাব নেই। এটা লাদাখের মানুষের আত্মার প্রতিধ্বনি,” এই মন্তব্যেই যেন প্রতিফলিত হচ্ছে লাদাখের বর্তমান বাস্তবতা: নীরবতার পাহাড় এখন ন্যায়ের দাবিতে গর্জে উঠছে।