কৃষ্ণনগর: শনিবার জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসান চলছিল গঙ্গার ঘাটে। শুধুমাত্র পুজোর কমিটি নয় ভাসানের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন বহু কৌতূহলী মানুষ। প্রতিমার ভাসানকে কেন্দ্র করে মহুয়া মৈত্রের লোকসভা কৃষ্ণনগরে তৈরী হল অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি।
ভাসান দিতে আসা এবং কৌতূহলী মানুষদের উপর পুলিশ চালাল নির্বিচারে লাঠি। শুধু লাঠি চার্জ নয় কোতোয়ালি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস ভাসান দিতে আসা মানুষের প্রতি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা ছাপার অযোগ্য, এমনটাই অভিযোগ।
কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের মূহুর্তে হিন্দুদের ওপর অন্যায় নির্যাতন চালানোর সময় কোতোয়ালি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসের মুখের ভাষা থেকেই বোঝা যায় যে হিন্দুদের কি চোখে দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ প্রশাসন !!!
কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজোতে এ’বছর নবমীর… pic.twitter.com/bozWWTwx6o
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) November 1, 2025
এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করেই ফের উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। যথারীতি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আক্রমণ শানিয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন। ” জগদ্ধাত্রী প্রতিমা বিসর্জনের সময় সনাতনীদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালালো মেরুদণ্ডহীন তোলাবাজ প্রশাসন। নির্মম লাঠিচার্জে মহিলারাও আহত হয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন প্রশ্ন একটাই,অন্য কোনো সম্প্রদায়ের উৎসবের সময় এই পুলিশকেই কেন টেবিলের তলায় কিংবা বাথরুমে লুকিয়ে থাকতে দেখা যায়! কারণ তোষণসর্বস্ব ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, তাঁর ‘বিশেষ ভোট ব্যাঙ্ক’-এর অন্তর্গতদের সমস্ত অপরাধে মুখে কুলুপ এঁটে সনাতনীদের ওপর নির্বিচারে অত্যাচার চালাতে হবে।
ফুটবলকে বিদায় জানালেন এই বাঙালি গোলরক্ষক
সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে পিছিয়ে নেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লিখেছেন “কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজোতে এ’বছর নবমীর সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাঁধভাঙা জনতার ঢল কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন মণ্ডপে জনপ্লাবনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। কৃষ্ণনগরের উৎসবমুখর জনতার আবেগ দেখে পুলিশ প্রশাসনের বিসর্জনের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।”
শুভেন্দুর মতে ” কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে. বিসর্জনের জন্যে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নাগরিক সুরক্ষার আশ্বাস দিলেও পুলিশ ব্যর্থ। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে জনগণ কে লাঠি পেটা করেছে মমতা পুলিশ। অমরনাথ কে. ও অমলেন্দু বিশ্বাস দুজনেরই অদক্ষতা প্রমাণিত ও এদের রেকর্ড হলো প্রাতিষ্ঠানিক তোলাবাজি। জনগণের স্বার্থের থেকে নিজ স্বার্থ এদের কাছে অনেক বেশি অগ্রাধিকার পায়।
শুধু বিওজেপি নেতারা নন পুলিশের এই নির্বিচারে লাঠিচার্জ এর ভিডিও দেখে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষও। প্রত্যেকেই এই ঘটনা সম্পর্কে বলেছেন এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী প্রশাসন। তারা নিজেরাই প্ল্যান করতে পারেনি এবংফ নিজেদের ব্যার্থতা ঢাকতে এই নক্কারজনক কাজ করেছে।
নিরীহ কৌতূহলী মানুষ এবং ভক্তদের উপর নির্বিচারে লাঠি চালিয়ে তারা আবারও প্রমান করেছে যে তারা মেরুদন্ডহীন। আবার অনেকে বলছেন যে যখন মুসলিমদের অনুষ্ঠানে কোনও বিশৃঙ্খলা হয় তখন তো পুলিশের হস্তক্ষেপ চোখে পড়ে না। তবে কি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগই সত্যি। পুলিশও নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষকে শেল্টার দিচ্ছে এবং হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে।


