পটনা: বিহারের ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে দিনক্ষণ। বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবকে জেতাতে এবার বদ্ধপরিকর ভোজপুরি গায়ক কেশরী লাল যাদব। তেজস্বীকে জেতাতে এবার তিনি প্রার্থী করতে চান তার স্ত্রী ছন্দা দেবীকে। আজ সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন এখন তিনি তার স্ত্রীকে রাজি করাতে চাইছেন ভোটে দাঁড়ানোর জন্য।
তিনি বলেন ছন্দা গৃহবধূ এবং দুই সন্তানের মা তার পক্ষে অসুবিধা থাকলেও কেশরী তাকে অনুরোধ করবেন প্রার্থী হওয়ার জন্য। তিনি আরও বলেন যদি একান্তই স্ত্রী রাজি না হন তবে তিনি তেজস্বীর হয়ে প্রচার করবেন বিধান সভা নির্বাচনের জন্য।
ছাব্বিশের ভোটে পরিবর্তন হবে: কুণাল ঘোষ
কেশরী লাল যাদব, যিনি শুধু ভোজপুরি গানের দুনিয়াতেই নয়, সিনেমাতেও জনপ্রিয় মুখ, সাংবাদিকদের বলেন, “আমি চাই আমার স্ত্রী ভোটে দাঁড়াক। গত চার দিন ধরে আমি তাঁকে রাজি করানোর চেষ্টা করছি। যদি রাজি হন, আমরা মনোনয়ন জমা দেব। না হলে আমি নিজে তেজস্বী ভাইয়ার হয়ে প্রচার করব।”
এই বক্তব্যের পর থেকেই বিহারের রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহলের পারদ চড়তে শুরু করেছে। কেউ বলছেন এটি তেজস্বী যাদবের আরজেডি-র প্রতি কেশরীর সমর্থনের প্রকাশ, আবার কেউ কেউ মনে করছেন এটি একধরনের জনসংযোগ কৌশল, যা তাঁর নিজস্ব জনপ্রিয়তাকেও রাজনীতির আলোচনায় নিয়ে এসেছে।
কেশরী লাল যাদব বলেন, “আমার স্ত্রী ছন্দা গৃহবধূ, দুই সন্তানের মা। তাই তাঁর জন্য ভোটের ময়দানে নামা সহজ নয়। কিন্তু আমি ওঁকে অনুরোধ করছি, যদি তিনি তেজস্বীর পাশে দাঁড়ান, তাহলে সেটা এক নতুন দৃষ্টান্ত হবে। একজন সাধারণ নারীও রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারেন, সমাজে পরিবর্তন আনতে পারেন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেশরীর এই পদক্ষেপের পেছনে শুধু রাজনৈতিক নয়, আবেগও রয়েছে। বিহারের মাটিতে ভোজপুরি সিনেমা ও সংগীতের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। কেশরী লালের মতো তারকার সমর্থন পাওয়া মানে আরজেডি-র জন্য বিশাল জনসম্পৃক্ততার সুযোগ।
বিশেষত, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা বিশাল। অন্যদিকে, আরজেডি শিবিরেরও মন ভালো এই ঘোষণায়। দলের এক নেতা বলেন, “তেজস্বী যাদবের ভাবনা সবসময়ই যুব সমাজ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের। কেশরী লালের মতো জনপ্রিয় মুখের সমর্থন আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা।”
এদিকে, বিজেপি শিবিরে কেশরীর এই পদক্ষেপকে কৌশলগত প্রচার বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এক বিজেপি মুখপাত্রের মন্তব্য, “যে গায়ক-অভিনেতা একদিন সিনেমায় গান গায়, পরদিন রাজনীতিতে এসে কথা বলে— এটাই আজকের রাজনীতির চেহারা।
মানুষ বুঝে গেছে কে আসল, কে অভিনয় করছে।” তবুও অস্বীকার করার উপায় নেই, কেশরী লাল যাদবের এই সিদ্ধান্ত নতুন করে উজ্জীবিত করেছে বিহারের ভোটের আবহ। তাঁর স্ত্রী ছন্দা দেবী প্রার্থী হবেন কি না, তা এখনও অনিশ্চিত, কিন্তু কেশরীর তেজস্বী-প্রেম এখনই শিরোনামে।
বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে তারকা প্রভাব নতুন কিছু নয়, তবে এবার বিষয়টি আলাদা। কারণ এখানে একজন জনপ্রিয় শিল্পী নিজের পরিবারকে রাজনীতির ময়দানে আনতে চাইছেন শুধুমাত্র একটি নেতৃত্বকে সমর্থন জানাতে।
এটি নিঃসন্দেহে তেজস্বী যাদবের জন্য এক বড় মনোবল যোগাচ্ছে। সবশেষে কেশরী লাল যাদব বলেন, “তেজস্বী ভাইয়া সৎ, পরিশ্রমী এবং যুব নেতৃত্বের প্রতীক। যদি আমার স্ত্রী রাজি হন, তাহলে এটা হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অবদান— একজন গায়ক হিসেবে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে।”