কারুর পদপিষ্ট দুর্ঘটনায় শীর্ষ আদালতের বড় সিদ্ধান্ত

karur-stampede-cbi-investigation-supreme-court-monitoring-2025

নয়াদিল্লি: তামিলনাড়ুর করুর জেলায় অভিনেতা-রাজনীতিক বিজয়ের দল তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগম (TVK)-এর রাজনৈতিক সভায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় তদন্তভার এখন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। ৪১ জনের মৃত্যু ও ৬০-রও বেশি আহত হওয়া এই মর্মস্পর্শী দুর্ঘটনা গোটা দেশকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল।

Advertisements

সূত্র অনুযায়ী, রবিবার সিবিআই আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটি নিজের হাতে নিয়েছে এবং করুরের ভেলুসামিপুরমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল। রাজ্য পুলিশের দায়ের করা এফআইআর পুনরায় নথিভুক্ত করেছে সিবিআই এবং স্থানীয় আদালতকে এই হস্তান্তরের বিষয়ে অবহিত করেছে।

   

বিক্রিতে তোলপাড়! রয়্যাল এনফিল্ডের এই মডেলের চাহিদা সর্বাধিক

এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের হাতে আসে। বিজয়ের দল TVK আদালতের কাছে স্বাধীন তদন্তের আবেদন জানিয়েছিল, যাতে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত একটি নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা যায়। শীর্ষ আদালত শুধু তদন্তের দায়িত্বই দেয়নি, বরং তদন্তের গুণগত মান বজায় রাখতে গঠন করেছে তিন সদস্যের একটি তদারকি কমিটি, যার নেতৃত্বে আছেন প্রাক্তন বিচারপতি অজয় রাস্তোগি।

বিচারপতি জে. কে. মহেশ্বরী এবং এন. ভি. অঞ্জারিয়া-র বেঞ্চ জানিয়েছে, “গত ২৭ সেপ্টেম্বরের এই পদদলন শুধুমাত্র তামিলনাড়ুই নয়, সমগ্র দেশের নাগরিকদের মানসপটে গভীর দাগ রেখে গেছে।” আদালতের মতে, এই ঘটনাটি নাগরিক জীবনের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত এবং মৃত ও আহতদের পরিবারের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই এখন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisements

আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, এই মামলায় রাজনৈতিক সুর অত্যন্ত প্রবল। রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে কিছু মন্তব্য করেছেন, যা তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি করতে পারে। আদালত স্পষ্ট ভাষায় বলে, “জনগণের তদন্ত প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এখন জরুরি। সিবিআইয়ের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তই সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে।”

বিচারপতিরা আরও উল্লেখ করেন, “এই ঘটনাটি দেশের গণচেতনাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এমন এক দুঃখজনক ঘটনা, যা নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। ন্যায়সঙ্গত ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, তা সুনিশ্চিত করতেই এই নির্দেশ।”

তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিজয়ের দল বলেছে, তারা শুরু থেকেই নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছিল, কারণ এ ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নানা অভিযোগ-প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। অন্যদিকে, বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন যে প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই এত প্রাণহানি ঘটেছে।

এখন দেশজুড়ে নজর সিবিআই তদন্তের দিকে। করুরের মানুষ এখনও ভোলেননি সেই দিন যখন একটি রাজনৈতিক সমাবেশ প্রাণঘাতী বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছিল। নিহতদের পরিবার ন্যায়ের আশায় দিন গুনছে, আর সুপ্রিম কোর্টের তদারকি নিশ্চিত করছে যে সেই ন্যায়বিচারের পথ এবার সত্যিই সঠিক হাতে পৌঁছেছে।