RSS নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের

karnataka-high-court-strikes-down-rss-related-ban

বেঙ্গালুরু, ১৮ নভেম্বর: কর্ণাটকের রাজনৈতিক মহলে আজ এক নতুন ঝড় উঠেছে। রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের একটি বিতর্কিত আদেশকে কর্ণাটক হাইকোর্টের ধারোয়াড় বেঞ্চ ‘অসাংবিধানিক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এই আদেশে জনস্থানে ১০ জনের বেশি মানুষের সমাবেশকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যা বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) নেতাদের মতে, জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে ঘোষিত একটি ‘পরোক্ষ নিষেধাজ্ঞা’ ছিল।

Advertisements

হাইকোর্টের এই রায়ে সরকারের ‘অতি-আগ্রাসী’ পদক্ষেপকে কঠোর ধাক্কা লেগেছে, এবং এটি রাজ্যের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোর সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। আদালতের এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র আরএসএস-এর শতবর্ষী উদযাপনের পথ সহজ করে দেয়নি, বরং সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকারকেই শক্তিশালী করেছে।

   

এফডিআই–এফআইআই বাড়াতে ই-কমার্স ও স্টার্টআপ শিল্পকে নিয়ে পীযূষ গোয়েলের জরুরি বৈঠক

ঘটনার পটভূমি ফিরে তাকালে দেখা যায়, এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল অক্টোবর মাসে। ১৮ অক্টোবর কর্ণাটকের গৃহ বিভাগ একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করে, যাতে বলা হয় যে, সরকারি সম্পত্তি বা জনস্থানে কোনো বেসরকারি সংগঠন বা গোষ্ঠী ১০ জনের বেশি লোক নিয়ে কোনো অনুষ্ঠান, ফুট মার্চ বা সমাবেশ করতে চাইলে আগে থেকে সরকারি অনুমতি নিতে হবে।

এই নির্দেশিকা জারির পিছনে ছিল আইটি ও বায়োটেক্নোলজি মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খার্গের একটি চিঠি। মন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া সরকারকে লিখে বলেছিলেন যে, আরএসএস সরকারি স্কুল, খেলার মাঠ এবং জনস্থানে ‘শাখা’ অনুষ্ঠান করে যুবকদের মনে ‘নেতিবাচক চিন্তা’ ছড়াচ্ছে। খার্গের চিঠিতে আরএসএস-এর কার্যক্রমকে ‘বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করে সর্বত্র নিষেধাজ্ঞার দাবি করা হয়।

Advertisements

এই নির্দেশিকা জারির পর আরএসএস-এর শতবর্ষী অনুষ্ঠানগুলো বিপন্ন হয়ে পড়ে, এবং বিজেপি নেতারা এটিকে ‘কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে চিহ্নিত করে।এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে প্রথম আঘাত আসে ২৮ অক্টোবর, যখন ধারোয়াড় বেঞ্চের বিচারপতি এম. নাগপ্রসন্নার নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চ অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে।

এই রায়ে আদালত স্পষ্ট করে বলে যে, এই নির্দেশিকা ভারতীয় সংবিধানের ১৯(১)(এ) এবং ১৯(১)(বি) ধারাগুলো লঙ্ঘন করে, যা মুক্ত মতপ্রকাশ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করে। আদালত উল্লেখ করে, “মৌলিক অধিকারগুলোকে সীমাবদ্ধ করতে হলে আইনসভা দ্বারা পাস করা আইন দরকার, সাধারণ সরকারি আদেশ দিয়ে নয়।”

এই স্থগিতাদেশ শুধুমাত্র পিটিশনারদের জন্য নয়, সকল নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য বলে আদালত জানায়। পিটিশন দায়ের করেছিল পুনঃচেতনা সেবা সংস্থা নামক একটি এনজিও, যারা যুক্তি দিয়েছে যে, এমনকি একটি পার্কে ছোটখাটো জন্মদিনের পার্টিও এই নিয়মে অবৈধ হয়ে যাবে।