পটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোটোদানের পর মহাগঠবন্ধনের নেতা এবং রাজ্যসভার সদস্য কপিল সিব্বাল একটি অদ্ভুত অভিযোগ তুলে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন। তিনি বলেছেন, “চোরের মতো ভোটার আনার জন্য ৪টি স্পেশাল ট্রেনে হাজার হাজার অভিবাসী ভর্তি করে বিহারে নিয়ে আসা হয়েছে। এটা নির্বাচনের সততার সঙ্গে ছলচাতুরী!” সিব্বালের এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে, কিন্তু এনডিএ নেতারা এবং রেলওয়ের কর্মকর্তারা তাকে ‘জ্ঞানহীনতার শিকার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
কারণ, এই ট্রেনগুলো ভোটার টার্নআউট বাড়ানোর জন্য রেল মন্ত্রকের নিয়মিত ‘ইলেকশন স্পেশাল ট্রেন’ যা প্রবাসী বিহারীদের বাড়ি ফিরতে সাহায্য করে। পর্যায় ২-এর ভোটোদান (১১ নভেম্বর) শেষ হওয়ার আগেই এমন অজুহাত শুরু হওয়ায়, এনডিএ বলছে, “হার নিশ্চিত, এখন শুধু অজুহাত খোঁজা!” সিব্বালের অভিযোগটি এসেছে একটি টিভি ইন্টারভিউতে। তিনি দাবি করেছেন, “প্রথম পর্যায়ে ৬০০০-এর বেশি ‘অভিবাসী’ ৪টি ট্রেনে এসে ভোট দিয়েছে, যা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চোখে ধুলো দেওয়ার চাল।
উচ্ছেদ অব্যাহত! হিমন্তর নির্দেশে সরল ৫৮০ মুসলিম পরিবার
এটা বিজেপি-জেডিইউ জোটের কৌশল, যাতে তাদের ভোট বাড়ানো যায়।” তার এই কথা শুনে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসাহাসি শুরু হয়েছে। একটি ভাইরাল পোস্টে লেখা, “কপিল সিব্বাল কাঁদছেন যে ট্রেনে অভিবাসী ভর্তি কিন্তু তিনি জানেন না, রেলওয়ে ভোটারদের জন্য স্পেশাল ট্রেন চালায়!” আরেক পোস্টে বলা হয়েছে, “২ কোটির বেশি ভোটারের মধ্যে ৬০০০ লোক এলে কী হয়? এটা তো প্রমাণ করে, বিহারী প্রবাসীরা বাড়ি ফিরে পরিবর্তন চায়!” সিব্বালের ভিডিও ক্লিপে লক্ষ লক্ষ ভিউ হয়েছে, কিন্তু বেশিরভাগ কমেন্টসে তাকে ‘অজ্ঞ’ বলে উপহাস করা হচ্ছে।
সত্যিই, রেল মন্ত্রকের তথ্য বলছে—প্রতি নির্বাচনে ‘হোম কামিং স্পেশাল ট্রেন’ চালানো হয়, যাতে প্রবাসী বিহারীরা সহজে বাড়ি ফিরতে পারে। ২০২৫-এর বিহার নির্বাচনের জন্য ২০০-এর বেশি স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়েছে, যা দিল্লি, মুম্বই, সুরাট, বেঙ্গালুরু থেকে পটনা, মুকুষ্পুরি, দার্ভাঙ্গা যায়। রেলওয়ে মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা বলেন, “এগুলো ভোটার টার্নআউট বাড়ানোর জন্য—৭৪ লক্ষ প্রবাসী বিহারীকে ফিরিয়ে আনা। এতে কোনও ছল নেই, এটা গণতন্ত্রের জয়।”
প্রথম পর্যায়ে ৬৪.৪৬% টার্নআউট হয়েছে, যা ২০২০-এর চেয়ে বেশি। ইসি-র স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) অনুসারে, কোনও বড় অভিবাসী ঢুকপকুড়ি হয়নি। সিব্বালেরএই অভিযোগ তার আগের এসআইআর-বিরোধী স্ট্যান্ডের ধারাবাহিকতাতিনি জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, “ইসি-কে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে, না হলে ভোটারদের অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।”
