অস্ত্র ইস্যুতে কল্যাণকে ‘ইডিয়ট’ আখ্যা রাজ্যপালের

kalyan-banerjee-rajbhavan-weapons-row-governor-remarks

কলকাতা: রাজভবনে ‘গুন্ডা পোষণ’ এবং তাদের কাছে ‘অস্ত্র সরবরাহ’ তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে উত্তাল রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গন । উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে সরাসরি কড়া ভাষায় জবাব দিলেন রাজ্যপাল সি. ভি. আনন্দ বোস। শুধু অভিযোগ অস্বীকারই নয়, কল্যাণকে ‘ইডিয়ট’ আখ্যা দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে তীব্র হুঁশিয়ারিও ছুড়ে দিলেন তিনি।

Advertisements

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি দাবি করেন রাজভবনে নাকি “গুন্ডা রাখা আছে” এবং তাদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “রাজভবনে অস্ত্রের মজুদ আছে, মিলিট্যান্ট তৈরি হচ্ছে।” ওই মন্তব্য মুহূর্তে ভাইরাল হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতেও পরিণত হয়।

   

পাকিস্তানে তীর্থে গিয়ে ‘নিখোঁজ’ শিখ-মহিলা: ‘ধর্মান্তরের’ দাবী পুলিশের!

এই অভিযোগের জবাবে রাজ্যপাল সি. ভি. আনন্দ বোস সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “মাননীয় সাংসদের এই মন্তব্য কি ভোটের সময় হিংসার পরিবেশ তৈরি করার ইচ্ছা থেকে উত্পন্ন? গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নষ্ট করতে চাইছেন কি?” রাজ্যপালের কথায়, এই ধরনের মন্তব্য “ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি” করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে মনে হয়।

তিনি আরও জানান, কোনও গোপনীয়তা বা অস্বচ্ছতা নেই রাজভবন সম্পূর্ণভাবে স্বচ্ছ। রাজ্যপালের চ্যালেঞ্জ, “রাজভবনের দরজা খোলা আছে। পুলিশ এসে তল্লাশি করুক। যদি একটাও অস্ত্র পাওয়া যায়, তবে আমি দায় নেব। আর যদি কিছু না পাওয়া যায়, তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”

Advertisements

এরপরই সবচেয়ে তীব্র বাক্যবাণ। রাজ্যপাল মন্তব্য করেন “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ইডিয়টের মতো কথা বলছেন।” তিনি আরও বলেন কল্যানের মন্তব্য অসাংবিধানিক ও বটে। এই মন্তব্য ঘিরেই রাজ্যজুড়ে নতুন করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। রাজ্যপালের পদমর্যাদা থেকে এমন শব্দবন্ধে রাজনৈতিক মহলের বড় অংশই বিস্মিত, তবে রাজ্যপাল নিজের অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও সরে আসতে রাজি নন।

এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যপালের হুঁশিয়ারি, “নির্বাচনে কোনো ধরনের হিংসার প্রচেষ্টা হলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। রাজভবন আইনের শাসন নিশ্চিত করবে।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের সময় আমি মাঠে থাকব। কারও বেয়াদপি বরদাস্ত করা হবে না তৃণমূলই হোক বা অন্য কেউ।”

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে কল্যাণের এই অভিযোগ এবং রাজ্যপালের বিবৃতি কি সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে দেবে? তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না দিলেও দলের ভেতরে অসন্তোষ স্পষ্ট। অনেকেই মনে করছেন, রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিছক উত্তর নয় এটি রাজনৈতিক বার্তা।

অন্যদিকে বিজেপি এই ইস্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র পেয়ে গিয়েছে তারা সরব হয়ে কল্যাণের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য রাজ্যপালকে আক্রমণ করতে গিয়ে তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে সাংবিধানিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে। বিজেপির দাবি, “তৃণমূল বুঝে গেছে, নির্বাচন সামনে তাই এখন থেকেই উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।”