কেন্দ্রকে কোনঠাসা করে লাদাখের পাশে জম্মু-কাশ্মীর

Indian Politics

শ্রীনগর, ২৪ সেপ্টেম্বর: লাদাখের রাজধানী লেহ তে পৃথক রাজ্যের দাবিতে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি (Indian Politics)। যুবকদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ হিংসায় রূপ নিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ লাদাখের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “লাদাখের লোকেরা ২০১৯ সালে ইউনিয়ন টেরিটরি উদযাপন করেছিল। কিন্তু এখন তারা রাজ্যত্ব চাইছে। আমরা জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তিপূর্ণভাবে রাজ্যত্ব দাবি করছি। কিন্তু ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিজেপি আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র হতে দিচ্ছে না।”

Advertisements

বুধবার লেহে হাজারো যুবক রাস্তায় নেমে রাজ্যত্ব এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়েছে। লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)-র যুব উইং-এর আহ্বানে বন্ধ এবং বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (এমএইচএ) ৬ অক্টোবর পরবর্তী বৈঠকের তারিখ ঘোষণা করায় বিক্ষোভকারীরা এটিকে “একতরফা নির্দেশ” বলে প্রত্যাখ্যান করে। ফলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, টিয়ার গ্যাস এবং লাঠিচার্জে ১৫ জন আহত হয় এবং বিজেপি অফিসে অগ্নিসংযোগ হয়।

   

এলএবি-র সহ-সভাপতি চেরিং দোর্জে বলেছেন, “জনগণের ধৈর্য শেষ হচ্ছে, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।” ওমর আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে বলেন, “লাদাখকে রাজ্যত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি, তারা ২০১৯-এ ইউটি উদযাপন করেছিল। কিন্তু এখন তারা হতাশ এবং বিশ্বাসঘাতকতার শিকার।

জম্মু ও কাশ্মীরে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে রাজ্যত্ব দাবি করেছি, কিন্তু বিজেপির ক্ষমতা হারানোর জেরে তারা আমাদের স্বাধীন রাজ্য হতে দিচ্ছে না। এটি জনগণের প্রতি অবিচার।” তিনি সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের দেওয়া ‘তিন-ধাপের সূত্র’ সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন এবং রাজ্যত্ব উল্লেখ করে বলেন, “তিন ধাপ সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু রাজ্যত্ব এখনও নেই। এটি বিজেপির প্রতিহিংসা।”

লাদাখের বিক্ষোভ ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ধারা ৩৭০ বাতিল এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে দুটি ইউটি-তে বিভক্ত করার পর থেকে চলছে। বৌদ্ধ-প্রধান লেহ এবং মুসলিম-প্রধান কর্গিলের যুবকরা একত্রিত হয়ে চারটি মূল দাবি তুলেছে: পূর্ণ রাজ্যত্ব, ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে স্বায়ত্তশাসন, স্থানীয় চাকরিতে সংরক্ষণ এবং আলাদা সংসদীয় আসন। পরিবেশবাদী সোনাম ওয়াংচুক হিংসার নিন্দা করে ১৫ দিনের অনশন বন্ধ করেছেন। তিনি বলেছেন, “হিংসা আমাদের লড়াইয়ের ক্ষতি করে। যুবকদের শান্তি বজায় রাখতে আহ্বান জানাই।”

Advertisements

ওমরের মন্তব্য লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মীরের দাবিকে যেন এক সূত্রে গেঁথেছে। তিনি বলেছেন, “লাদাখের হতাশা আমাদের মতই। কেন্দ্রকে তাদের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে জানাতে হবে।” বিজেপি নেতারা এই বিক্ষোভকে “অরাজকতা” বলে অভিহিত করেছেন, কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, “আমরা আমাদের পরিচয় রক্ষা করতে চাই।”

১৩ হাজার শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বড় উপকার

চীন-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী লাদাখে পরিবেশগত সংকট এবং বাইরের প্রভাব যুবকদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অশান্তি মোদী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্থানীয় অধিকারের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। কেন্দ্রকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, না হলে অশান্তি ছড়াতে পারে। এই লড়াই লাদাখের আদিবাসী সংস্কৃতির অস্তিত্বের প্রশ্ন।