চে-কাস্ত্রোর যুগের নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত! মার্কিন ‘শেকল’ ছিঁড়তে কিউবার পাশে ভারত

দীর্ঘ ছয় দশক পেরিয়ে গিয়েছে। তবুও মার্কিনি আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কবল থেকে মুক্ত হয়নি লাতিন আমেরিকার ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র কিউবা (Cuba)। বিদেশি বিনিয়োগ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের…

India supports to the resolution by Cuba on the ending the economic embargo.

দীর্ঘ ছয় দশক পেরিয়ে গিয়েছে। তবুও মার্কিনি আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কবল থেকে মুক্ত হয়নি লাতিন আমেরিকার ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র কিউবা (Cuba)। বিদেশি বিনিয়োগ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রে এখনও মার্কিনি নিষেধাজ্ঞার শেকল বিদ্ধ কাস্ত্রোর দেশ। যুগ বদলেছে, সেই সময় মার্কিনি আর্থিক আগ্রাসনকে অবজ্ঞা করেই একরকম স্বনির্ভর সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন তৎকালীন কিউবান বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো ও চে গুয়েভ্রা (Che Guevara)।

খালিস্তানি সুরেই বোমা মেরে বিমান ওড়ানোর হুমকি, আকাশ-আতঙ্কে উদ্বিগ্ন ভারত

   

সেই কারণে আজও কিউবার মতো দেশে প্রবেশ করতে পারেনি কোকাকোলা ও মার্সিডিজের মতো মার্কিনি সংস্থাগুলি। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে কিউবান অর্থনীতি। তাই হাভানার রাস্তায় হাঁটলে আজও চোখে পড়বে সত্তরের দশকের রং বেরঙের ভিন্টেজ গাড়ি। পথ-ঘাট থেকে অট্টালিকা, ডাক ব্যবস্থা সবেতেই যেন কয়েক দশক পিছিয়ে পড়েছে কাস্ত্রোদের দেশ।

TMC: কর্পুরের মতো উবে গেছে আন্দোলন,ডাক্তারদের আক্রমণে ঘুঁটি সাজাচ্ছে ‘সিনিয়র’ তৃণমূল

কিন্তু চে-কাস্ত্রো জমানা এখন অতীত। তবে ১৯৫৯ সালের চে-কাস্ত্রোর বিপ্লবকে মনে রেখেই যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে চায় র্তমানে মিগুয়েল দিয়াজের সরকার। যারফলে মুক্ত অর্থনীতির পথেই হাঁটতে চায় হাভানা। কিন্তু একমাত্র অন্তরায় এখনও সেই আমেরিকাই। পিগ উপসাগরে বহু ঢেউ বইলেও এখনও অতীত শক্রতা ভুলতে পারেনি হোয়াইট হাউজ। তবুও সম্প্রতি মার্কিনি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে রাষ্ট্রসংঙ্ঘে একটি প্রস্তাব পেশ করে কিউবা। যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই কিউবাকেও মুক্ত বানিজ্যের অধিকার দানের আর্জি জানিয়েছে মিগুয়েল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারন সভায় প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হয় (India on Cuban resolution)। আর তখনই কার্যত আমেরিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কিউবাকে মুক্ত সমর্থন জানাল ভারত (India)।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের (UNGA) ফার্স্ট সেক্রেটারি স্নেহা দুবে (Sneha Dubey) এই সমর্থন প্রকাশ করে বলেন, “ভারত বহিরাগত শক্তি দ্বারা একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে। এবং সব দেশকে নিজেদের অর্থনৈতিক নীতি স্বাধীনভাবে প্রণয়নের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়। বহুপাক্ষিকতার প্রতি অবিচল বিশ্বাস নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে, ভারত রাষ্ট্রসঙ্ঘের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং কোনও দেশের ওপর আরোপিত একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে।” তিনি উল্লেখ করেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা দেশগুলির সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখানোর ক্ষেত্রে যথাযথ নয়।”

পাটুলিতে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত কিশোর, তদন্তে নামল পুলিশ

স্নেহা দুবে আরও বলেন যে,কিউবার বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল ধরে আরোপিত অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং আর্থিক নিষেধাজ্ঞাগুলি শুধুমাত্র দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা কঠিন করে তুলছে না, বরং কিউবার জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ভারতসহ অনেক দেশ কিউবার এই প্রস্তাবের পক্ষে সুরে সুর মিলিয়েছে। অতীতেও জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে ইন্দিরা-কাস্ত্রোর ‘স্নেহের কূটনৈতিক’ সম্পর্ক মাথাব্যাথা বাড়িয়েছিল ওয়াশিংটনের। এমনকী আন্তর্জাতিকমঞ্চে সবসময়ই ভারতের পক্ষে দাঁড়িয়ে সওয়াল করতে পিছুপা হয়নি কিউবা। অর্থ্যাৎ এবারও আমেরিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাস্ত্রোর দেশের পাশে দাঁড়াতে পিছুপা হলনা ভারত।