বাংলায় ‘বাবরি মসজিদ’ নিয়ে বিস্ফোরক কংগ্রেসের মুসলিম সাংসদ

imran-masood-babri-masjid-comment-mosque-not-for-politics

নয়াদিল্লি: বাবরি মসজিদ ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরঙ্গ ফের তীব্র হচ্ছে জাতীয় রাজনীতিতে। ঠিক এমনই সময় বিস্ফোরক মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিলেন কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ। তিনি সরাসরি অভিযোগ তুললেন মসজিদকে কেন্দ্র করে চলা রাজনৈতিক বিদ্বেষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মুসলিম সমাজেরই।

Advertisements

তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবির সম্প্রতি বাবরি মসজিদকে ঘিরে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সেই মন্তব্যের জবাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইমরান মসুদের বক্তব্য “যে কোনও পক্ষ থেকেই সাম্প্রদায়িক উস্কানি হোক না কেন, তার ফলাফল ভোগ করে সাধারণ মানুষ। রাজনীতির লড়াইয়ে আগুন জ্বলে উঠলে ঘর পোড়ে সাধারণ মানুষের। আর মুসলমানদেরই তখন সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয়।”

   

আধার কার্ড দিয়ে কি CIBIL স্কোর দেখা যায়? জানুন সহজ উপায়

তিনি আরও বলেন “মসজিদ বানানো উচিত এতে কোনও দ্বিধা নেই। কিন্তু মসজিদ উপাসনার জায়গা। মসজিদ রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কেন্দ্র হলে তা ইসলামের ভাবনার বিরোধী।” ইমরান মসুদের বক্তব্যে স্পষ্ট বিরক্তি তিনি সাম্প্রদায়িক ভিত্তিক রাজনীতি ও ধর্মকে ভোটব্যাঙ্ক গঠনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।

তিনি বলেন “আমি বারবার বলেছি মসজিদের নাম করে রাজনীতি কোরো না। ধর্ম মানুষকে শান্তি দেয়, বিভাজন নয়। ভোট পাওয়ার জন্য মসজিদকে হাতিয়ার করলে মুসলমানদেরই শেষ পর্যন্ত তার ভয়াবহ ফল ভোগ করতে হবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইমরান মসুদের মন্তব্য কোনও রাজনৈতিক বার্তা নয় বরঞ্চ সম্প্রীতির বার্তা। তারা বলেছেন এর আগেই বাবরি মিসজিদ এবং রাম মন্দির নিয়ে দেশে দীর্ঘ দিন ধরে রাজনৈতিক এবং আইনি চাপানউতোর চলেছে। মাসুদের কোথায় স্পষ্ট যে এই ধরণের ঘটনা যেন ভারতের কোথাও আর না ঘটে।

Advertisements

এই প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস সাংসদের মন্তব্য উল্লেখযোগ্য কারণ তিনি শুধু বিজেপি নয়, একইসঙ্গে মুসলিম সমাজের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অংশকেও দায়ী করেছেন। তাঁর কথায় “ধর্ম মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হলে সেটা আর ধর্ম থাকে না, সেটা ক্ষমতার খেলা হয়ে যায়। আর এই খেলায় ক্ষতি হয় মসজিদেও, মন্দিরেও, মানুষের জীবনেও।”

কংগ্রেসের একাংশের মতে, দলীয় নেতৃত্বের মধ্যেও কেউ কেউ চান মুসলিম রাজনীতি আরও প্রগতিশীল পথে যাক, ধর্মীয় আবেগের নামে চরমপন্থা বা রাজনৈতিক মেরুকরণের পরিবর্তে সামাজিক-শিক্ষা-অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রাধান্য পাক। ইমরান মসুদের বক্তব্য সেই অবস্থানকেই স্পষ্ট করেছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের বার্তা নতুন দিক আনতে পারে। মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দৌড় যে তীব্র হবে তাতে সন্দেহ নেই, কিন্তু ইমরান মাসুদের বক্তব্য এটি বুঝিয়ে দিল মুসলিম সমাজের একাংশ ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলতে শুরু করেছে। বাবরি মসজিদ, রাম মন্দির এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতির টানাপোড়েন দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের

রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে সংবেদনশীল অধ্যায়। কিন্তু আজ আবার প্রশ্ন উঠছে রাজনীতি কি ধর্মকে ব্যবহার করবে, নাকি ধর্মকে সম্মান করবে? মানুষ কি বিভেদে হাঁটবে, নাকি উন্নয়নের পথে? ইমরান মসুদের শেষ মন্তব্যেই সেই আক্ষেপ স্পষ্ট “মসজিদে আল্লাহর নাম স্মরণ করা হবে তবে ক্ষমতার খেলা নয়। মসজিদ রাজনীতি নয়, প্রার্থনার স্থান।”