Monday, December 8, 2025
HomeWest BengalKolkata Cityরাজনৈতিক অঙ্ক নতুন করে সাজালেন হুমায়ুন, ভরতপুর আসন ছাড়ার প্রশ্নই নেই

রাজনৈতিক অঙ্ক নতুন করে সাজালেন হুমায়ুন, ভরতপুর আসন ছাড়ার প্রশ্নই নেই

- Advertisement -

ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রের রাজনীতিতে এক নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। বহু বিতর্ক, উত্তেজনা ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যেই নিজের জেলাতেই ‘বাবরি’ মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir) । শিলান্যাসের অনুষ্ঠান প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় তীব্র চর্চা। শাসক দল থেকে বিরোধী—সকলেরই নজর ছিল হুমায়ুনের পদক্ষেপে। তবে সবচেয়ে বড় চমক আসে শিলান্যাসের পরদিনই। শনিবার যাঁকে কেন্দ্র করে জল্পনা ছিল, তিনি হয়তো বিধায়ক পদ ছাড়বেন—রবিবার সেই হুমায়ুন কবীরই স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কোনওভাবেই ইস্তফা দিচ্ছেন না।

হুমায়ুন কবীর বলেন, “ভরতপুরের মানুষই আমাকে বিধায়ক হিসেবে চান। তাঁরা আমায় নির্দেশ দিয়েছেন, ইস্তফা দেওয়া চলবে না। তাঁদের সম্মান, তাঁদের বিশ্বাস রক্ষার জন্যই আমার পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত আমি প্রত্যাহার করছি।” তাঁর এই ঘোষণা অবশ্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে। জেলায় ‘বাবরি’ মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের খবর ছড়াতেই বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, কেন এখন এই সিদ্ধান্ত? কেন এই ইস্যু ঘিরে উত্তেজনা তৈরি করা হচ্ছে? কেউ বলেন ধর্মীয় আবেগকে রাজনৈতিক মঞ্চে তোলা হচ্ছে, কেউ আবার অভিযোগ করেন ভোটের আগে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর কৌশল। যদিও হুমায়ুন কবীরের দাবি, এতে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই—এটি সম্পূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব পালনের অংশ।

   

তবে বিরোধীরা দাবি করছেন, এই শিলান্যাসের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক পরিকল্পনা। বিশেষ করে সম্প্রতি রাজ্য রাজনীতির নানা টানাপোড়েনের মধ্যেই এই প্রতীকী পদক্ষেপ আরও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।শিলান্যাসের পরই একাংশ রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছিল, হুমায়ুন কবীরের উপর নাকি দলীয় স্তরে চাপ তৈরি হয়। সেই কারণেই হয়তো তিনি পদত্যাগের কথা ভাবছেন। বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, তিনি নাকি দলের নির্দেশ অমান্য করেছেন।

কিন্তু রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হুমায়ুন কবীর জানিয়ে দেন, তাঁর সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। তিনি আর ইস্তফা দিচ্ছেন না। তিনি বলেন,“ভরতপুরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁদের অধিকার রক্ষার জন্য। তাঁরা যখনই জানতে পারেন যে আমি ইস্তফা দিতে চাইছি, তখনই তাঁরা অনুরোধ করেন—‘আপনি থাকুন, আমরা আপনাকে চাই।’ তাই তাঁদের সম্মানেই আমি সিদ্ধান্ত বদলেছি।”এই মন্তব্যের পর থেকেই হুমায়ুনের ইউ-টার্ন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

দিনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক বার্তা আসে তাঁর আরেক উক্তি থেকে। এদিন রাজ্যের ব্রিগেডে ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তুলে হুমায়ুন কবীর ঘোষণা করেন, এই মন্তব্য যে নতুন করে রাজনৈতিক অভিঘাত তৈরি করবে, তা বলাই বাহুল্য। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি ধর্মীয় পরিচিতিকেই পাল্টা শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। বিরোধী শিবির বলছে, এটি সরাসরি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা। অন্যদিকে হুমায়ুনের সমর্থকরা দাবি করছেন, তিনি কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষার কথাই বলেছেন।

 

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular