গুজরাটে ফের বড় রাজনৈতিক রদবদল। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের নেতৃত্বে শুক্রবার রাজ্যের নতুন মন্ত্রিসভার ঘোষণা করল বিজেপি সরকার। মোট ২৬ জন নতুন মন্ত্রীকে নিয়ে গঠিত হয়েছে এই নতুন দল, যেখানে সবচেয়ে চর্চিত নাম রিবাবা জাডেজা — ভারতীয় ক্রিকেটার রবীন্দ্র জাডেজার স্ত্রী। রাজনীতিতে তাঁর উত্থান এখন গুজরাটের চায়ের দোকান থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
নতুন মন্ত্রিসভার তালিকায় আরও রয়েছেন স্বরূপজি ঠাকোর, প্রবীণকুমার মালি, রুশিকেশ প্যাটেল, দর্শনা ভাগেলা, কুন্বরজি বাভালিয়া, অর্জুন মোধভাডিয়া, পরশোত্তম সোলাঙ্কি, জিতেন্দ্র ভাগানি, হর্ষ সাংভি, কানুভাই দেশাই প্রমুখ।
বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী বাদে গুজরাট সরকারের সমস্ত মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেন। বিজেপি শিবিরের এক শীর্ষ নেতা জানান, দলের পক্ষ থেকে সকলকে দুপুরের মধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলা হয়, যাতে মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আসন্ন স্থানীয় নির্বাচন এবং ২০২৭ সালের বিধানসভা ভোটের আগে “কৌশলগত পুনর্গঠন” করতে পারেন।
মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত-এর সঙ্গে দেখা করে নতুন মন্ত্রীদের তালিকা জমা দেন। শুক্রবার দুপুর নাগাদ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই মন্ত্রিসভা পরিবর্তন গুজরাটে বিজেপির ভবিষ্যৎ সংগঠন শক্তি গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। রিবাবা জাডেজার মতো তরুণ ও পরিচিত মুখকে মন্ত্রী করা হয়েছে মূলত নারী ভোটার এবং শহরাঞ্চলের যুব ভোটারদের টানার উদ্দেশ্যে।
নতুন মন্ত্রিসভার অন্যতম আকর্ষণ রিবাবা জাডেজা ২০২২ সালে জামনগর উত্তর আসন থেকে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন। তখন থেকেই তাঁর রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে আগ্রহ ছিল সর্বত্র। এদিন মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ায় তিনি বলেন, “গুজরাটের উন্নয়নই আমার লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন পূরণের জন্য আমি নিষ্ঠাভরে কাজ করব।”
এছাড়াও মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন প্রবীণ নেতা অর্জুন মোধভাডিয়া, যিনি একসময় কংগ্রেসের মুখ ছিলেন কিন্তু পরে বিজেপিতে যোগ দেন। ফলে এই নতুন গঠন বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণেও এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভূপেন্দ্র প্যাটেল ২০২৭-এর ভোটের আগে সংগঠনকে আরও তরুণ, আধুনিক ও প্রান্তিক সম্প্রদায়বান্ধব করতে চাইছেন। একইসঙ্গে দলের পুরনো মুখগুলোকেও জায়গা দিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে।
মোদী-অমিত শাহের রাজ্যে এই রাজনৈতিক রদবদল নিঃসন্দেহে জাতীয় স্তরেও প্রভাব ফেলবে। রিবাবা জাডেজার রাজনীতিতে উত্থান শুধু এক প্রাক্তন ক্রিকেটারের পরিবারের গল্প নয়, বরং বিজেপির “নারী নেতৃত্ব” প্রচারের অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।