চেন্নাই, ১৯ নভেম্বর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাতুর (DMK leader) সফরের ঠিক আগে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে, যাতে ডিএমকে (দ্রাবিড় মুন্নেত্র কঝগম) তেনকাসি দক্ষিণ জেলা সম্পাদক ভি. জয়বালান প্রকাশ্যে বলছেন, “মোদীকে শেষ করে দিলে তবেই তামিলনাড়ু উন্নতি করবে।”
এই বক্তব্যকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হত্যার হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ভিডিওটিতে ডিএমকে সাংসদ রানি শ্রীকুমার এবং শঙ্করনকোভিল বিধায়ক ই. রাজাও উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু তারা এই ঘৃণ্য এবং অসাংবিধানিক বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করেননি।
ফের অনিয়ম! SSC-কে দাগিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার
তাদের নীরবতাকে অনেকে পক্ষপাত হিসেবে দেখছেন।ঘটনাটি ঘটেছে তেনকাসি জেলায় একটি প্রতিবাদ সভায়, যা ‘স্টেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিফর্মস’ (এসআইআর)-এর বিরুদ্ধে আয়োজিত হয়েছিল। জয়বালান তার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীকে ‘নরকাসুর’-এর সঙ্গে তুলনা করেন এবং বলেন, “মোদী তোমাদের ভোট ছিনিয়ে নিতে আগ্রহী, সে আরেকটা দানব। তামিলনাড়ু ভালো থাকবে শুধু যদি মোদীকে শেষ করে দেওয়া হয়।” এই কথাগুলো শুনে সভাস্থলের অনেকে হাততালি দিয়েছিলেন, যা ডিএমকের মধ্যে ঘৃণামূলক মনোভাবের প্রতিফলন বলে বিবেচিত হচ্ছে।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই রাজনৈতিক মহলে হইচই পড়ে গেছে।তামিলনাড়ু বিজেপির রাজ্য সভাপতি নয়নার নাগেন্দ্রন প্রথমেই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “এটা কেবল একটা বক্তব্য নয়, এটা দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের হুমকি। ডিএমকে শাসনের অধীনে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, যেখানে দলীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীর জীবনের হুমকি দিতে সাহস পান। জয়বালানকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।”
নাগেন্দ্রন আরও যোগ করেছেন, “তেনকাসি সাংসদ রানি শ্রীকুমার এবং বিধায়ক রাজার নীরবতা দলের হিংসাত্মক মানসিকতার প্রমাণ। তারা যদি প্রতিবাদ করতেন, তাহলে এটা কমপক্ষে একটা আনুষ্ঠানিক আপত্তি হতো। কিন্তু তাদের চুপচাপ থাকা মানেই সমর্থন।”
এই ঘটনা প্রধানমন্ত্রীর সফরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আরও স্পর্শকাতর। মোদি আজ আন্ধ্রপ্রদেশের পুত্তাপার্থিতে শ্রী সত্য সাই বাবার তীর্থস্থানে যাবেন, তারপর কোয়েম্বাতুরে পৌঁছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
এই সফরের পটভূমিতে জয়বালানের বক্তব্যকে বিজেপি ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে চিহ্নিত করছে। পার্টির এক নেতা বলেছেন, “ডিএমকে এখনও সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। এরকম হুমকি দেওয়া হলে কীভাবে গণতান্ত্রিক ভারতে শান্তি থাকবে?”ডিএমকে নেতৃত্ব এখনও এই ঘটনায় কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের দফতর থেকে কোনো বিবৃতি আসেনি, যা বিজেপির কাছে ‘অনুমোদন’ বলে মনে হচ্ছে।
স্ট্যালিন কি তার ‘অধ্যয়নমূলক নীরবতা’ বজায় রাখবেন, নাকি অবশেষে এই বিপজ্জনক অপরাধীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেবেন—এটাই এখন সবার প্রশ্ন। ডিএমকে একজন জনপ্রতিনিধি বলেছেন, “এটা একটা অতিরঞ্জিত ব্যাপার। জয়বালানের কথা রূপকভাবে বলা, কোনো হুমকি নয়। কিন্তু এই নীরবতা দলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।”


