বহরমপুর: শনিবার বাবরি মসজিদের শিলান্যাস ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে (Dilip Ghosh supports Humayun Kabir)। এই আবহেই এবার হুমায়ুন কবিরের পাশে দাঁড়ালেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি তার বক্তব্যে স্পষ্ট জানিয়েছেন যে পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের উপরে অত্যাচার করছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। হুমায়ুন কবির কে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন নিজের দল করে মুসলিমদের রক্ষা করতে। তার সঙ্গে তিনি আরও বলেন যে “মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে থেকে কিছু হবে না।
তার থেকে নিজের দল গড়ে হুমায়ুন বিকাশের রাজনীতি করুন।” আজ বেলডাঙ্গায় শুরু হয়েছে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস অনুষ্ঠান। কোরান তেলাওয়াত শেষ হলেই শিলান্যাস হয়ে যাবে বাংলার বাবরি মসজিদের। এই আবহেই দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তবে বিজেপি এই বিষয়ে এখনও নিজেদের অবস্থান না জানালেও। বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে।
লুটেরা বাবরের নামে মসজিদ কেন? বেলডাঙা বিতর্কে ফুঁসছেন মুসলিম বোর্ডের কর্তা
মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন এই ধর্মীয় মেরুকরণ তৃণমূল মানে না। তিন আরও বলেন যে ধর্মীয় রাজনীতি বাংলার সর্বনাশ ডেকে আনছে এবং এটা এখন আর কোনো ছোট ঘটনা নয়। বেলডাঙ্গায় এখন মুহূর্ত গুনছে হাজারো মানুষ। সকাল ১১টা নাগাদ কোরান তেলাওয়াত শেষ হলেই হুমায়ুন কবির নিজে শিলান্যাস করবেন। তিনি সকালে বাসভবন থেকে বেরিয়ে বলেন, “বাবরি মসজিদ আমাদের অধিকার। মসজিদ হবে, কলেজ হবে, হাসপাতাল হবে।
এটা শুধু ধর্ম নয়, উন্নয়নের প্রতীক।” তাঁর গাড়ির কনভয়ে শত শত গাড়ি, মোটরবাইক, সমর্থকরা ইট-বালি মাথায় নিয়ে মিছিল করছেন। পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ঘিরে রয়েছে পুরো এলাকা।দিলীপ ঘোষের এই অবস্থান বিজেপির অফিসিয়াল লাইনের সঙ্গে মিলছে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য, শেহজাদ পুনাওয়ালারা ‘বাবরি নামে হিন্দু-বিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে চিৎকার করছিলেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষের আজকের বক্তব্য যেন পুরো খেলাটাই উল্টে দিল।
দলের একাংশ মনে করছে, মুর্শিদাবাদ-মালদহের মুসলিম-প্রধান এলাকায় ২০২৬-এর আগে বিজেপি নতুন কৌশল নিচ্ছে—হুমায়ুনকে কাছে টেনে টিএমসির মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরানো। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধ সামনে এনে দিতে পারে। কারণ দলের সর্বভারতীয় লাইন এখনো ‘বাবরি নামে উস্কানি’র বিরুদ্ধে।
তবে মুর্শিদাবাদে যেখানে ৭০ শতাংশের বেশি মুসলিম ভোটার, সেখানে দিলীপ ঘোষের এই ‘সফট হিন্দুত্ব’ কৌশল ভবিষ্যতে বিজেপির জন্য নতুন দরজা খুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।এদিকে বেলডাঙ্গার মাটিতে শিলান্যাসের কাজ এগোচ্ছে। হুমায়ুন কবিরের হাসিতে আত্মবিশ্বাস।
দিলীপ ঘোষের সমর্থন তাঁর পিঠে নতুন পালক। আর নবাবী শহর মুর্শিদাবাদ আজ আবারও ইতিহাসের সাক্ষী হচ্ছে—যেখানে ধর্ম আর রাজনীতি একাকার হয়ে গিয়ে শান্তির বদলে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। ২০২৬-এর আগে বাংলার রাজনীতি যে নতুন মেরুকরণের দিকে এগোচ্ছে, আজকের এই দৃশ্য তারই ট্রেলার।


