দিল্লি বিস্ফোরণের মাথা উমরের ভিডিও নিয়ে বিস্ফোরক ওআইসি

delhi-blast-owaisi-reaction-terror-video-questions-home-minister

হায়দরাবাদ, ১৯ নভেম্বর: দিল্লির ভয়াবহ বিস্ফোরণকে (Delhi Blast) কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যখন উদ্বেগ, তখনই জাতীয় রাজনীতিতে বড় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন AIMIM প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত ড. উমর-উন-নবির একটি ভাইরাল ভিডিও ঘিরে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক, আর সেই ভিডিওর ব্যাখ্যা দিতে এগিয়ে এসে ওয়াইসি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন।

Advertisements

ঘটনার সূত্রপাত একটি ভিডিওকে ঘিরে, যেখানে অভিযুক্ত ড. উমর-উন-নবিকে ‘সুইসাইড বম্বিং’, ‘শাহাদাত’ প্রভৃতি শব্দ ব্যবহার করতে শোনা গেছে। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, এই ধরনের চরম উগ্র বক্তব্য কোথা থেকে এল, আর কীভাবে একজন ডাক্তার সন্ত্রাসবাদী চেতনায় অনুপ্রাণিত হলেন?

   

কিশোরকে জঙ্গি বানাতে মৌলবাদের পাঠ, মাদ্রাসায় ‘মগজধোলাই’ মা-বাবার

এই পরিস্থিতিতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন AIMIM নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেন, “মিডিয়ায় যে ভিডিওটি ঘুরছে, সেখানে দিল্লি বিস্ফোরণের অভিযুক্তকে ‘সুইসাইড বম্বিং’ ও ‘শাহাদাত’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এটা ভয়ানক অপরাধ এবং স্পষ্ট সন্ত্রাসবাদ। ইসলাম এ ধরনের কাজকে হারাম বলে।

সব মুসলিম চিন্তাধারার আলেমরাই এসব কার্যকলাপের বিরোধিতা করেন।” ওয়াইসি আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদকে ইসলাম ধর্মের সাথে জুড়ে দেওয়া পরিকল্পিত অপপ্রচার। তিনি জোর দিয়ে বলেন “কিছু মানুষ বারবার সন্ত্রাসবাদকে মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তবে ইসলাম এসব কার্যকলাপকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।”

Advertisements

তবে ওয়াইসির বক্তব্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিরুদ্ধে তার সরাসরি প্রশ্ন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, “গত ছয় মাসে কোনও কাশ্মীরি কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দেয়নি।” কিন্তু যদি তা-ই হয়, তাহলে রাজধানীর বুকেই এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটল কীভাবে?

ওয়াইসির কথায়, “যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজের মুখে দাবি করছেন যে নতুন কোনও কাশ্মীরি যুবক সন্ত্রাসবাদে যোগ দেয়নি, তখন দিল্লির মতো সুরক্ষিত এলাকায় এমন বিস্ফোরণ ঘটে ১৪ জন মারা গেলেন কীভাবে? এর দায় কার?”তিনি আরও বলেন, দেশের রাজধানীতে এত কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও বড়সড় হামলা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রশাসনিক ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়।

“কে দায় নেবে এই ভুলের জন্য? কার নজরদারিতে ফাঁক রইল? এটা কি গোয়েন্দা সংস্থার ত্রুটি, নাকি রাজ্য-কেন্দ্রের নিরাপত্তা সমন্বয়ে ঘাটতি?” AIMIM প্রধানের এই সরাসরি আক্রমণে নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে রাজনৈতিক মহলে। কেউ কেউ বলছেন, ওয়াইসি রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছেন, আবার অনেকে মনে করছেন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে তিনি সরকারের দায়বদ্ধতার দাবি করেছেন।

এদিকে বিস্ফোরণের তদন্ত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। NIA, দিল্লি পুলিশ স্পেশাল সেল এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি মিলে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জোগাড় করছে। ড. উমর-উন-নবির ভিডিওতে প্রচারিত বক্তব্য যে সন্ত্রাসবাদী আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত তা নিয়ে তদন্তকারীরাও নিশ্চিত। দেশের বিভিন্ন মহল থেকে এও জোরদার দাবি উঠছে যে, এই বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে কোনও রাজনৈতিক দোষারোপ না করে সঠিক তদন্ত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার সংস্কারই হওয়া উচিত অগ্রাধিকার।