উত্তরবঙ্গ, ১২ অক্টোবর: রাজ্যজুড়ে যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগে উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকা বিপর্যস্ত, ঠিক তখনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন। রবিবার কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ সফরে রওনা হয়ে তিনি জানিয়ে দেন, এই দুর্যোগে যাঁরা নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করেছেন, তাঁদের রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গের দুর্যোগে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন। সিভিল ডিফেন্স, ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনিক কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ স্থানীয় বাসিন্দারাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁরা সবাই আমাদের গর্ব। আমরা তাঁদের সম্মান জানাব।”
এই পুরস্কার শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগের সময় স্থানীয় বাসিন্দারা যেভাবে প্রশাসনকে সহায়তা করেছেন, জীবন বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তাতেই খুশি রাজ্য সরকার। তাঁদের সাহস, সহানুভূতি ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিকে কুর্নিশ জানিয়ে এই পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি।
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আগামী পাঁচ দিন তিনি উত্তরবঙ্গে থাকবেন এবং বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করবেন। শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক সহ কয়েকটি অঞ্চলে প্রশাসনিক বৈঠক, পুনর্গঠনমূলক কর্মসূচি এবং স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “এই দুর্যোগে বহু মানুষ তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হারিয়েছেন। যেমন রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি। আমরা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত এসব ডকুমেন্টের ডুপ্লিকেট কার্ড ইস্যু করব। যাতে কেউ সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন।”
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক ও সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গিই উঠে এসেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দুর্যোগের সময় রাজ্যের তরফ থেকে তৎপরতা যেমন দেখা গিয়েছে, তেমনই পরবর্তী পুনর্গঠনের দিকেও সরকার নজর দিচ্ছে বলে বার্তা দেওয়া হয়েছে এই ঘোষণার মাধ্যমে।