পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ উড়িয়ে জয়ের প্রশংসায় কংগ্রেস নেতা

congress-leader-praises-jay-shah-controversy

নয়াদিল্লি: ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে তাঁর প্রভাব এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত। আইসিসি-র প্রেসিডেন্ট জয় শাহ, অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র, সাম্প্রতিক বিশ্বকাপ জয় ও মহিলা ক্রিকেটের সাফল্যে নাম উঠেছে সবার আগে। তবে এবার তাঁকে ঘিরে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিলেন কংগ্রেস নেতা বিজয় শুক্ল।

Advertisements

দলের প্রচলিত অবস্থানের বাইরে গিয়ে তিনি জয় শাহের প্রশংসায় সরব হয়েছেন এবং তাতেই কংগ্রেস শিবিরে ছড়িয়েছে অস্বস্তি। রাজীব শুক্ল বলেছেন বার বার জয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বার বার বলা হয় যে রাজনীতি করে তাকে এই সভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে তাকে কোনো রাজনৈতিক পদ দেওয়া হয়নি। 

   

একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বিজয় শুক্ল বলেন, “জয় শাহের বিরুদ্ধে যেভাবে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অমূলক। অমিত শাহ তাঁকে কোনও রাজনৈতিক পদ দেননি, কিংবা কোনও প্রশাসনিক সুবিধা দেননি। জয় শাহ যেমনভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তেমনভাবেই হয় অন্যরাও। তিনি যোগ্যতার জোরেই আজ আইসিসি প্রেসিডেন্ট।”

তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে আহত একাধিক BLO

তিনি আরও যোগ করেন, “মহিলা ক্রিকেটে জয় শাহের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। WPL (Women’s Premier League)-কে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনিই। মহিলাদের জন্য সমান ম্যাচ ফি নিশ্চিত করেছেন, যেটা ভারতের ক্রীড়া ইতিহাসে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”

বিজয় শুক্ল আরও বলেন, “এটা রাজনীতি নয়, স্বীকৃতি। যে মানুষ ভারতের মহিলা ক্রিকেটকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিতে পরিণত করেছেন, তাঁকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বলে উপেক্ষা করা অন্যায়। জয় শাহ প্রশাসনিক দক্ষতায় পুরুষ ও মহিলা দুই বিভাগের ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।”

Advertisements

তাঁর বক্তব্যের পরই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ বিজয় শুক্ল আসলে বিজেপির প্রতি ‘নরম মনোভাব’ দেখাচ্ছেন। বিশেষত যখন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার “পরিবারতন্ত্র” নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করছে, তখন এমন মন্তব্যকে “রাজনৈতিক আত্মঘাতী” বলেই কটাক্ষ করেছেন অনেকে।

বিজেপির তরফে অবশ্য এই মন্তব্যকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বিজেপির এক মুখপাত্র বলেন, “সত্য কথাকে চেপে রাখা যায় না। আজ কংগ্রেসের এক নেতা তা স্বীকার করে নিয়েছেন জয় শাহ নিজের পরিশ্রম, দৃষ্টিভঙ্গি ও নিষ্ঠার জোরে এই জায়গায় এসেছেন। রাজনীতি নয়, এটি ভারতের ক্রীড়া উন্নয়নের গল্প।”

অন্যদিকে, কংগ্রেসের শিবিরে কিছুটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। একাংশের মতে, “বিজয় শুক্ল কেবল একজন ক্রীড়াপ্রেমী হিসেবে মন্তব্য করেছেন, এটা কোনও দলীয় অবস্থান নয়।” অন্যদিকে দলের তরুণ নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছেন, “এই মন্তব্য বিজেপির প্রচার হিসেবে ব্যবহৃত হবে, যা আমাদের রাজনৈতিক ক্ষতি করতে পারে।”

ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, জয় শাহের নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড একাধিক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মহিলাদের জন্য পৃথক লিগ, সমান ম্যাচ ফি, নতুন একাডেমি ও পরিকাঠামো তৈরি সব মিলিয়ে ভারতের মহিলা ক্রিকেটে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, “জয় শাহের প্রশাসনিক কাজের স্বীকৃতি দলীয় সীমার বাইরে গিয়েই দেওয়া উচিত।”