Monday, December 8, 2025
HomeBharatPoliticsফের আদালতে হোঁচট খেয়ে বিপাকে মমতা সরকার

ফের আদালতে হোঁচট খেয়ে বিপাকে মমতা সরকার

- Advertisement -

কলকাতা, ৯ ডিসেম্বর: কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং (Chingrighata metro expansion)বহু প্রতীক্ষিত পরিবহণ প্রকল্প চিংড়িঘাটা মেট্রো সম্প্রসারণ নিয়ে ফের চাপে পড়ল রাজ্য সরকার। জমিজট, ট্রাফিক সমস্যা, প্রশাসনিক অদক্ষতা বিভিন্ন অজুহাতে বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা এই প্রকল্প নিয়ে এবার সরাসরি কড়া ভাষায় প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতির মন্তব্যে স্পষ্ট মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ এগোতে রাজ্য সরকারের গাফিলতির অভিযোগ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।

সম্প্রতি সংসদে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন চিংড়িঘাটা মেট্রো সম্প্রসারণ মূলত জমিজট ও রাজ্যের সহযোগিতার অভাবে বিলম্বিত। রাজ্যের সঙ্গে বহুবার বৈঠক করেও কাজ শুরুর মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে দাবি রেলমন্ত্রীর। সেই মন্তব্যের পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছিল তুমুল আলোচনা। আর এবার আদালতে উঠে এলো একই প্রশ্ন—প্রকল্প এগোচ্ছে না কেন?

   

পুলিশের জালে কৃষকের ছদ্মবেশে অস্ত্রোপাচারকারী জাহিদ

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের বেঞ্চে মামলাটি উঠতেই আদালতের প্রথম প্রশ্ন “মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হল, কিন্তু কার্যকর কিছু হল না কেন?” রাজ্যের তরফে জানানো হয়, চিংড়িঘাটায় মেট্রোর কাজ শুরু করতে হলে দীর্ঘ সময় ট্রাফিক ব্লক করতে হবে। সেই জায়গায় ট্রাফিক বন্ধ থাকলে অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারবে না, ফলে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হবে। এটাই কাজ শুরুর প্রধান বাধা বলে জানায় রাজ্য।

কিন্তু রাজ্যের এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট নয় আদালত। বিচারপতির কটাক্ষ “এটা একটা প্রেস্টিজিয়াস প্রজেক্ট। কলকাতার মানুষই এর সুবিধা পাবেন। অথচ আপনারা ট্রাফিক ব্লকের কথা দেখাচ্ছেন? এটা কি নতুন সমস্যা? বছরের পর বছর ধরে তো একই অজুহাত শোনা যাচ্ছে।” বিচারপতি আরও বলেন, যে এলাকায় কাজ হবে সেখানে ট্রাফিক ব্লক থাকবেই, সেটা তো প্রকল্প শুরুর মুহূর্ত থেকেই জানা ছিল। তাহলে এতদিন যাবৎ তা অনুধাবন করা হলো না কেন? মাঝে একাধিক বৈঠক ও নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও প্রকল্পে কোন বাস্তব অগ্রগতি না হওয়ায় স্পষ্টতই ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালত।

গত শুনানিতেই আদালত রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে তলব করে প্রকল্পের জটিলতা, জমিজট, ট্রাফিক সমস্যা এবং প্রয়োজনীয় সমাধান নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছিল। কিন্তু আজকের শুনানি দেখে আদালতের পর্যবেক্ষণ—যথাযথ উদ্যোগের অভাবেই আটকে আছে কাজ।

রেলমন্ত্রীর মন্তব্য, রাজ্যের অচল অবস্থা, এবং এবার আদালতের কঠোর প্রশ্ন সব মিলিয়ে চিংড়িঘাটা মেট্রো সম্প্রসারণ নিয়ে মমতা সরকারের সংকট আরও গভীর। পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের এই অংশ সম্পূর্ণ হলে সেক্টর V থেকে হাওড়া পর্যন্ত যাতায়াত সহজ হয়ে যাবে। চিংড়িঘাটার যানজট কমবে, সল্টলেক ও ইএম বাইপাসের উপর চাপ কমবে। ফলে এই কাজ বিলম্বিত হওয়া শহরবাসীর বড় ক্ষতি।

রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে এটা কি প্রকল্পে বাস্তব সমস্যার জট, নাকি প্রশাসনিক অনাগ্রহ? বিরোধীপক্ষ বলছে, বছর বছর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও দলের ভিতরে ও প্রশাসনে সমন্বয়ের অভাবে কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ মেট্রো পরিষেবা এখনও অধরা।

এদিকে আদালত স্পষ্ট করেছে, এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ব্লকের অজুহাতে আটকে রাখা যাবে না। পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যকে কার্যকর রোডম্যাপ জমা দিতে হতে পারে। আদালত আরও নির্দেশ দিতে পারে সমস্যার বিকল্প সমাধান খুঁজতে যেমন রাতের দিকে কাজ, বিকল্প পথ তৈরির ব্যবস্থা বা ধাপে ধাপে ট্রাফিক ব্লক।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular