শুক্রবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠককে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল পশ্চিমবঙ্গের SIR সংক্রান্ত। বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্দিষ্ট পাঁচটি প্রশ্ন তুলেন, যা মূলত ভোটার তালিকা ও নির্বাচনী স্বচ্ছতার বিষয়ে ছিল।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে কোনও প্রশ্নেরই সন্তোষজনক উত্তর পাননি। তাদের বক্তব্য, কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া ব্যাখ্যা যথেষ্ট স্পষ্ট বা যুক্তিসঙ্গত ছিল না। এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছে।
অন্যদিকে, বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যে বেশ কিছু জাতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে যে, কমিশনের প্রতিনিধিরা দাবি করছেন যে, তৃণমূলের প্রতিটি প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া হয়েছে। ফলে একই ঘটনায় দুটি ভিন্ন দাবি সামনে এসেছে। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস ‘উত্তরহীনতা’ ও ‘স্বচ্ছতার অভাব’ তুলে ধরেছে, অন্যদিকে কমিশন বলছে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি নির্বাচন কমিশনের দাবি খণ্ডন করেছেন। তিনি বলেছেন, কমিশনের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, তা ‘মিথ্যা’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’। অভিষেক আরও বলেন, “যদি প্রমাণ করতে হয়, কমিশন চাইলে বৈঠকের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করতে পারে। এতে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।”
অভিষেকের এই দাবি রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে। বিশেষ করে ভোটার তালিকা ও SIR-এর স্বচ্ছতা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব অনেক বেশি, তাই অভিষেকের এই চ্যালেঞ্জে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।এদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিবেদন বা মন্তব্য প্রকাশ করা হয়নি। কমিশনের নীরবতা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ‘সময় নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া’ হিসেবে দেখছেন। তবে রাজনৈতিক দল এবং সংবাদমাধ্যমের নজরদারি থাকায় সিসিটিভি ফুটেজ বা বৈঠকের নথি প্রকাশ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তৃণমূলের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, SIR সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো মূলত নির্বাচনী স্বচ্ছতা, ভোটার তালিকার সঠিকতা এবং ভোটাধিকার সংরক্ষণ নিয়ে। বৈঠকে এই বিষয়গুলোতে কমিশনের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়ায় দলটি অবসাদ ও সংশয় প্রকাশ করেছে। অভিষেকের কথায়, “কমিশন যদি প্রকৃত তথ্য প্রকাশ না করে, তাহলে ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে মানুষ আস্থাহীন হয়ে পড়বে।”
