ভোটমুখী বাংলায় ফের আধ্যাত্মিক আবহে মুখর হয়ে উঠেছে ব্রিগেড চত্বর। বহুদিন পর এত বড় মাপের গীতাপাঠ (Geeta Path 2025) অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল থেকেই শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মাঠে উত্সাহী ভক্তদের ঢল নেমেছে। আয়োজকদের দাবি, এ বারের গীতাপাঠে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের কণ্ঠের সুর মিলবে। ভোরের আলো ফুটতেই মানুষজনের দীর্ঘ সারি দেখা যায় ব্রিগেডের চারদিকে। কেউ হাতে ধূপ, কেউ গীতা, কেউ বা পতাকা—সব মিলিয়ে আধ্যাত্মিকতার আবেশে ভরে উঠেছে পরিবেশ। সকালের প্রথম থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, ট্রেন ও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ভক্তরা ঢল নামিয়েছেন কলকাতার পথে।
বিভিন্ন স্টেশন, টার্মিনাস ও বাস ডিপোতে দেখা গিয়েছে গীতাপাঠে আসা মানুষের ভিড়। ব্রিগেডের কাছে পৌঁছতেই নিরাপত্তার বেড়া পেরিয়ে গেটে প্রবেশের জন্য দাঁড়িয়েছেন হাজারো মানুষ। আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, দুপুরের মধ্যে ভক্তদের সংখ্যা আরও দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এত বড় সমাবেশকে সামনে রেখে প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ব্রিগেড মাঠ ও সংলগ্ন এলাকাজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। ময়দানের চারপাশে বসানো হয়েছে নজরদারি ক্যামেরা, ড্রোনের মাধ্যমে চলছে আকাশপথে পর্যবেক্ষণ। পুলিশ জানিয়েছে, যে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে গোটা এলাকা কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।
উপস্থিত জনতার প্রবেশ ও প্রস্থান নির্বিঘ্ন করতে ব্রিগেড মাঠ ঘিরে ২৫টি আলাদা গেট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি গেটে রয়েছে সিসিটিভি, মেটাল ডিটেক্টর এবং স্বেচ্ছাসেবক-সহ পুলিশ কর্মী। জনসমুদ্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৈরি রয়েছে কুইক রেসপন্স টিমও। এ বছরের গীতাপাঠ অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বিশাল মাপের মঞ্চের আয়োজন। মাঠের কেন্দ্রে তৈরি করা হয়েছে এক বিশাল মূল মঞ্চ, যেখানে থাকবে গীতাপাঠের প্রধান আচার্যরা। মূল মঞ্চকে ঘিরেই রয়েছে আরও দুটি বড় মঞ্চ, যাতে আয়োজকদের বক্তব্য, আধ্যাত্মিক আলোচনা ও বিশেষ অতিথিদের বক্তব্য রাখা হবে।
মাঠের সামনের দিকে নির্মিত হয়েছে একটি সাংস্কৃতিক মঞ্চ, যেখানে বিকেল থেকে শুরু হবে গীতি, ভক্তিগান ও নৃত্যাভিনয়ের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল ইতিমধ্যে সেখানে রিহার্সাল শুরু করে দিয়েছে।
বৃহৎ সমাবেশে যাতে পিছনের সারিতে থাকা দর্শকরাও অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেন, সেজন্য মাঠের একাধিক স্থানে বসানো হয়েছে জায়ান্ট স্ক্রিন। মূল মঞ্চে গীতাপাঠ শুরু হওয়ার পর সেই দৃশ্য লাইভ সম্প্রচার করা হবে প্রতিটি স্ক্রিনে। এ ছাড়া বিশেষভাবে তৈরি সাউন্ড সিস্টেমে গীতার শ্লোক ও সঙ্গীত পরিষ্কারভাবে শোনা যাবে মাঠের সব প্রান্তে।
