গুয়াহাটি: ২০২৬ সালের অসম বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সমীকরণ ক্রমেই বদলাচ্ছে (BPF no alliance with BJP)। সেই সমীকরণে বড়সড় মোড় আনল বোরোল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট (BPF)। বহু জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে BTC ডেপুটি চিফ এবং দলের শীর্ষ নেতা রিহান দাইমারি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন নির্বাচনের আগে বিজেপি-সহ কোনও দলের সঙ্গে BPF কোনও ভাবেই জোটে যাচ্ছে না।
গোহপুরের করাই গুড়ি এলাকায় আয়োজিত বিজয় উৎসবে দাঁড়িয়ে এই ঘোষণা দেন দাইমারি। সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের মধ্যেও তাঁর গলায় ছিল দৃঢ়তার সুর। তিনি বলেন “আমরা কোনও প্রি-পোল অ্যালায়েন্সে যাচ্ছি না। BPF স্বাধীনভাবেই নির্বাচনে লড়বে।”
১ লক্ষেরও বেশি প্রার্থীকে চাকরির সুযোগ দিচ্ছে ভারতীয় রেল
এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে নিজস্ব শক্তিকেই জোরদার করতে চাইছে BPF। তবে পুরোপুরি দরজা বন্ধ করে রাখছে না দল। দাইমারি জানান “পোস্ট ইলেকশন পরিস্থিতি নির্ভর করবে কারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় এবং তারা BTC-র উন্নয়নে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” অর্থাৎ নির্বাচনের আগে নয়, পরে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে BPF।
অসমের ছয়টি সম্প্রদায়ের ST মর্যাদা চাওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি তুমুল উত্তপ্ত। এই ইস্যুতেও স্পষ্ট অবস্থান জানালেন রিহান দাইমারি। তাঁর বক্তব্য “আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু বর্তমান আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার যেন কোনও ভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয়।” এই মন্তব্য আসলে BPF-এর দীর্ঘদিনের অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি। দল বারবার বলেছে তারা উন্নয়ন ও ন্যায়সংগত অধিকার দুটোকেই গুরুত্ব দেয়।
সম্প্রতি BTC সচিবালয়ে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এদিন সেই প্রসঙ্গেও সরব হন দাইমারি। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন “এই ঘটনার সঙ্গে ABSU এবং UPPL-র কয়েকজন জড়িত।” সঙ্গে তাঁর আবেদন অসম সরকার যেন দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়। এই মন্তব্যের জেরে BTC-র রাজনৈতিক সমীকরণ আরও বিপজ্জনক মোড় নিতে পারে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
এই বিজয় উৎসব আসলে BPF-র শক্তি প্রদর্শনেরও একটি মঞ্চ হয়ে ওঠে। সভায় হাজির ছিলেন ধনশিরি কনস্টিটুয়েন্সির এক্সিকিউটিভ মেম্বার ফইস মুচাহারি, চেয়ারম্যান ত্রিদীপ দাইমারি সহ দলের বহু নেতা–কর্মী। সমর্থকদের ভিড় দেখে সহজেই বোঝা যাচ্ছিল, আসন্ন নির্বাচনে নিজেদের রাজনৈতিক জমি আরও শক্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে BPF।
বিশেষজ্ঞদের মতে BPF এবার স্পষ্টভাবে নিজেদের আলাদা শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। BTC-র উন্নয়ন, ST মর্যাদা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এই তিন ইস্যুকেই সামনে রেখে নিজেদের অবস্থান জোরালো করছে তারা। BJP–UPPL জোটের সঙ্গে গত কয়েক বছরের দূরত্বও এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। অসমের রাজনীতিতে BPF-র এমন অবস্থান নিঃসন্দেহে এক বড় বার্তা ২০২৬-এর নির্বাচনে বোরোল্যান্ডে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে।
