কলকাতা: BLO দের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আজ তারা CEO দফতরের উদ্দেশ্যে একটি মিছিল করে। এই মিছিলে নাকি কোনো BLO ছিলেন না ছিল তৃণমূলের ক্যাডাররা। এমনই অভিযোগ করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তাদের অভিযোগ বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে “ভিড়ের ৮০ শতাংশই BLO নন।
আজকে নাকি কলকাতার রাস্তায় BLO আন্দোলন!
কিন্তু মজার বিষয়—ভিড়ের ৮০%-ই BLO নয়, তৃণমূলের ফ্যাক্টরি-প্রডাক্ট কর্মী!ভিড়ের ভিডিও দেখলাম—নিজেদের মুখেই স্বীকার করছে অনেকেই যে তারা BLO নয়।
কেউ সরকারি কর্মচারী, কেউ আবার স্কুলের শিক্ষিকা!
আর কিছু মুখ দেখে তো মনে হল—স্কুলে কোনওদিন… pic.twitter.com/MswL7QWXwL— Tarunjyoti Tewari (@tjt4002) November 24, 2025
ভিডিও-ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, মিছিলে বহু মানুষই নিজেরা স্বীকার করছেন যে তারা BLO নন।” বিজেপি নেতাদের বক্তব্য “কেউ সরকারি কর্মচারী, কেউ শিক্ষিকা, কেউ স্কুলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বললেও BLO নন অথচ BLO আন্দোলনের নামে অংশগ্রহণ করছেন।”
হাওড়ায় পুলকার দুর্ঘটনা, পুকুরে পড়ে তিন পড়ুয়ার মৃত্যু, আহত ১
এই অভিযোগের জেরে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কারা রাস্তায় নেমেছিলেন? BLO-র দাবি কতটা সত্যি? রাজনৈতিক মহল মনে করছে, SIR নিয়ে চাপ–ই নাকি বিতর্কের মূলে। বিজেপির অভিযোগ, “আসল BLO-দের মধ্যে থেকেই অনেকে আন্দোলনে অংশ নিতে চাননি। তাই শূন্যতা পূরণ করতে তৃণমূল নিজেদের সমর্থকদের নামিয়ে দিয়েছে।” বিজেপির দাবি, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আন্দোলনের আকার বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।”
তবে ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক অংশগ্রহণকারী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তারা শিক্ষক বা সরকারি কর্মচারী হলেও BLO দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের বক্তব্য “পেশা দিয়ে যাচাই করা যাবে না। অনেক শিক্ষকও BLO হিসেবে কাজ করেন। দাবিটা আমাদের কাজের চাপ ও সময়সীমা বাড়ানো নিয়ে রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক নেই।”
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। দলের বক্তব্য “BLO-রা অস্বাভাবিক পরিমাণ কাজের চাপে রয়েছেন। বাড়ি বাড়ি যাচাই, তথ্য যাচাই, ডিজিটাল ফর্ম পূরণ, প্রতিবেদন জমা এত কাজের জন্য সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন। আন্দোলন সম্পূর্ণ ন্যায্য।” রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টির মাঝেই ময়দানে রয়েছে মূল প্রশ্ন BLO-রা কি সত্যিই সময়সীমা বাড়ানো চান? নাকি আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত?
বেশ কয়েকজন BLO নাম প্রকাশ না করে জানান “SIR প্রক্রিয়া অত্যন্ত অল্প সময়ে বিপুল কাজ করানো হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি যাচাই করতে গেলে মানুষ পাওয়া যায় না। তথ্য মেলে না। ভুল হলে দায় BLO-র। তাই সময়সীমা বাড়ানো অত্যন্ত প্রয়োজন।”
তবে আরেক অংশ বলছেন “রাজনৈতিক দলের নির্দেশে না গেলে চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে ভয় তৈরি করা হয়েছে। তাই অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে।” বিজেপি নেতৃত্ব মন্তব্য করেছেন যে ২০১১ র পর যারা চাকরি পেয়েছেন তারা কিভাবে চাকরি পেয়েছেন সবাই জানে। তাই তাদের চাকরি যাওয়ার ভয় স্বাভাবিক।
নির্বাচনী বিশেষজ্ঞদের মতে, “SIR প্রক্রিয়া থমকে গেলে ভোটের নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডারও বিশৃঙ্খল হবে। ফলে প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহল দুই পক্ষই এই বিষয়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবে দেখছে।” সব মিলিয়ে আজকের মিছিল শুধু শ্রমিক বা কর্মীদের দাবি নয় বরং পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক কাঠামো, রাজনৈতিক দূরত্ব এবং ভোটের লড়াই তিনটিই একই ইস্যুতে এসে মিলেছে। এখন সবার নজর নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের দিকে।
