গগৈকে পাকিস্তানে ফিরে যেতে বলে বিজেপির বিক্ষোভ

/bjym-protest-against-gaurav-gogoi-in-assam

গুয়াহাটি: অসমের পশ্চিম করবি আংলং জেলার ছোট শহর ডনকামুখাম— ২ নভেম্বর, শনিবার সকাল থেকেই সরগরম ছিল এই পাহাড়ি জনপদ। হাজার হাজার ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা (BJYM) কর্মী রাস্তায় নেমে তীব্র বিক্ষোভ দেখালেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস – অসম শাখার সভাপতি ও লোকসভায় বিরোধী দলনেতা গৌরব গগৈয়ের বিরুদ্ধে।

Advertisements

প্রদর্শনকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড, পতাকা ও ব্যানার নিয়ে স্লোগান তুলতে থাকেন — “Gaurav Gogoi Go Back”, “Congress Down, Down”। মুহূর্তেই শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গৌরব গগৈ আদিবাসী-বিরোধী মানসিকতা পোষণ করেন এবং করবি আংলংয়ের উন্নয়নকে বারবার বাধা দিয়েছেন।

   

“উধাও India Gate”! বিরোধীদের তোপের মুখে বিজেপি

একজন স্থানীয় বিজেপি যুব নেতা বলেন, “১৫ বছর কংগ্রেস শাসনে করবি আংলং কেবল অশান্তি দেখেছে, উন্নয়ন দেখেনি। রাস্তাঘাট, শিক্ষা, কর্মসংস্থান কিছুই হয়নি। কিন্তু বিজেপি সরকার আসার পর মানুষ উন্নয়নের স্বাদ পেয়েছে।”

বিক্ষোভকারীদের একাংশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে গৌরব গগৈকে ‘পাকিস্তানের এজেন্ট’ বলেও কটাক্ষ করেন। তাদের দাবি, গগৈ দেশের স্বার্থের পরিপন্থী মন্তব্য করে থাকেন। এমনকি কেউ কেউ অভিযোগ করেন যে, তাঁর স্ত্রী পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে বেতন পান যদিও এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এক প্রতিবাদী যুবক বলেন, “গৌরব গগৈ আসলে অসমের উন্নয়ন চান না। তিনি বারবার উপজাতি সমাজের স্বার্থবিরোধী নীতি গ্রহণ করেছেন। এখন জনগণ তাঁকে প্রত্যাখ্যান করছে।”

বিক্ষোভের পর একটি বিশাল মিছিল বের হয় শহরের প্রধান রাস্তাগুলি জুড়ে। ডনকামুখাম বাজার থেকে শুরু করে মিছিল ঘুরে আসে থানা মোড় পর্যন্ত। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি মঞ্চে উঠে বলেন, “এই আন্দোলন এখানেই থেমে থাকবে না।

Advertisements

আগামী দিনে গোটা করবি আংলংয়ে আমরা গৌরব গগৈয়ের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলব।” তিনি আরও বলেন, “অসমে বিজেপি সরকার যখন পাহাড়ি জনপদের উন্নয়নে কাজ করছে, তখন কংগ্রেস নেতা শুধু রাজনীতি করছেন।

মানুষ এসব আর মেনে নেবে না।” বিক্ষোভ যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, তার জন্য জেলা প্রশাসন আগেভাগেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করেছিল। মিছিল চলাকালীন কিছু জায়গায় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষ হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, সমাবেশ শেষে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়।

এই ঘটনার পর অসম কংগ্রেসের তরফে প্রতিক্রিয়া আসে। দলের মুখপাত্র বলেন, “বিজেপি যুব মোর্চা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। তাই তারা এখন ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। গৌরব গগৈ সবসময়ই আদিবাসী জনগণের পাশে থেকেছেন।”

অন্যদিকে, বিজেপির দাবি, “কংগ্রেস শুধু ভোটের সময় পাহাড়ের মানুষের কথা বলে, কিন্তু কাজের সময় চুপ থাকে। আজকের প্রতিবাদই দেখাচ্ছে, যুবসমাজ আর তাদের বিশ্বাস করে না।” ডনকামুখামের সাধারণ মানুষ জানান, “এখানে উন্নয়ন চাই, রাজনীতি নয়। কেউ যদি কাজ না করে, তার বিরোধিতা হবেই। তবে অভিযোগগুলো যাচাই করা জরুরি।”