জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যসভা নির্বাচনে গেরুয়া ঝড়

bjp-victory-rajya-sabha-election-satpal-sharma

শ্রীনগর: জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যসভা নির্বাচনে বিজেপির বড় জয়ের খবরে পার্টির কর্মীরা উল্লাসে মেতে উঠেছে। ইউনিয়ন টেরিটরির বিজেপি প্রেসিডেন্ট সতপাল শর্মা চতুর্থ আসন থেকে জয়ী হয়ে রাজ্যসভায় প্রবেশ করেছেন। তিনি ৩২ ভোট পেয়ে ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) ইমরান নবী দারকে (ইমরান নিসার নামে পরিচিত) ২২ ভোটে হারিয়েছেন।

Advertisements

এই নির্বাচনটি ২০১৯ সালে আর্টিকেল ৩৭০ বাতিলের পর প্রথমবারের রাজ্যসভা নির্বাচন, যা ইউটির রাজনৈতিক গতিশীলতাকে নতুন করে তুলে ধরেছে। বিজেপির এই জয়কে পার্টির কর্মীরা ‘ওমর আবদুল্লাহর দলকে বড় ধাক্কা’ বলে উদযাপন করছে, এবং শ্রীনগর থেকে জম্মু পর্যন্ত উৎসবে মিষ্টি বিতরণ শুরু হয়েছে। এই ফলাফল এনসি-কংগ্রেস জোটের প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে বিজেপির স্থানীয় প্রভাবকে প্রমাণ করেছে।

মোহনবাগান নয়, বেঙ্গালুরুতেই খেলবেন রায়ান উইলিয়ামস

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পর বিজেপির কর্মীরা লিডার অফ অপোজিশন সুনিল শর্মার নেতৃত্বে লিজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি কমপ্লেক্সের বাইরে নাচগানে মেতে উঠেছেন। সতপালের জয়কে ‘জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের নতুন অধ্যায়’ বলে উল্লেখ করে কর্মীরা বলছেন, “এটা বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের শক্তির প্রমাণ।”সতপাল, যিনি জম্মু-কাশ্মীর বিজেপির সভাপতি এবং প্রাক্তন মন্ত্রী, এই জয়কে ‘জনতার বিশ্বাসের বিজয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তাঁর নির্বাচনী অভিযানে বিজেপির ২৮ জন বিধায়কের পাশাপাশি কিছু স্বতন্ত্র এবং অন্যান্য দলের সমর্থন মিলেছে। অন্যদিকে, এনসি তিনটা আসন জিতেছে চৌধুরী মোহাম্মদ রমজান (৫৮ ভোট), সাজ্জাদ কিচলু এবং শামী ওবেরই (জিএস ওবেরই) যা তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রতিফলন। কিন্তু চতুর্থ আসনের হারে ওমর আবদুল্লাহর দলের মুখে হতাশার ছাপ পড়েছে।

Advertisements

এই নির্বাচনের পটভূমি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে খালি পড়ে থাকা চারটি রাজ্যসভা আসন। ২০২৪ সালের অক্টোবরে লিজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি নির্বাচনের পর এই নির্বাচন হয়েছে, যেখানে ৯০ সদস্যের অ্যাসেম্বলিতে ৮৮ জন বিধায়ক রয়েছেন (দুটো আসন খালি)। এনসি-কংগ্রেস জোটের ৫৪ জন বিধায়ক (৪১ এনসি, ৬ কংগ্রেস, ৬ স্বতন্ত্র, ১ সিপিআই(এম), ৩ পিডিপি) এবং বিজেপির ২৮ জনের মধ্যে এই লড়াই হয়েছে।

প্রথম দুটো আসনে এনসি সহজ জয় পেয়েছে, কিন্তু তৃতীয় এবং চতুর্থ আসনের যৌথ নির্বাচনে এনসি শামী ওবেরই এবং ইমরান নবী দারকে দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু পিডিপি এবং কংগ্রেসের সমর্থন সত্ত্বেও এনসি চতুর্থ আসন হারিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের সাজ্জাদ গনি লোনের দল ভোট না দিয়ে থেকে বিজেপির পথ সহজ করেছে। নির্বাচন কমিশনের মতে, একটা আসন জেতার জন্য ৪৫ ভোট লাগত, কিন্তু যৌথ আসনে গণনা ভোটের ভিত্তিতে হয়েছে।

সতপাল শর্মা, জম্মুর একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, ২০১৪ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। তিনি ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জম্মু আসন থেকে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। ২০২৪ সালে ইউটির বিজেপি সভাপতি হিসেবে তিনি পার্টির সাংগঠনিক কাজকে শক্তিশালী করেছেন। তাঁর জয়কে বিজেপি নেতা সুনিল শর্মা ‘অপোজিশনের ষড়যন্ত্রের ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, “কংগ্রেস এবং পিডিপি এনসির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপিকে আটকাতে চেয়েছিল, কিন্তু জনতার বিশ্বাস আমাদের জিতিয়েছে।” অন্যদিকে, এনসি নেতা ওমর আবদুল্লা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, “এটা একটা আঘাত, কিন্তু আমরা তিনটা আসন জিতে শক্তিশালী।” ইমরান নবী দার, এনসির তরুণ প্রবক্তা, হার মেনে বলেছেন, “ভোটারদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি, কিন্তু লড়াই চলবে।”