পটনা: ভারতের রাজনৈতিক মঞ্চে আবার বিতর্কের আগুন। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনী টিকিট বণ্টন নিয়ে এমন একটি বক্তব্য দিয়েছে, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও রাজনৈতিক নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছে। সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে, এক বিজেপি মুখপাত্রের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে বিজেপি কতজন মুসলিম প্রার্থীকে নির্বাচনের টিকিট দিয়েছে?
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “কাউকে নয়, এবং আমরা দেবও না।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা মুসলিমদের ভোট পাই না।” এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিজেপির এই স্পষ্ট বক্তব্য দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলেছে।
তেজস্বী যাদবের বড় ঘোষণা, পঞ্চায়েত নেতাদের ৫০ লাখ টাকার বিমা
বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বিজেপির এই বক্তব্য নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। তাদের মতে বিজেপির এই অবস্থান স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, তারা মুসলিম সম্প্রদায়কে নির্বাচনী প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করছে না। মুখপাত্রের বক্তব্যে উঠে এসেছে যে, দলের কৌশলগত সিদ্ধান্ত হল সেই সম্প্রদায়ের ওপর ফোকাস না করা, যাদের ভোট তারা পায় না।
তবে, এই মন্তব্য সমালোচকদের কাছে একটি বিপজ্জনক প্রবণতা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা দেশের বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে দুর্বল করতে পারে। ভারতের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতাকে তার মূল ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে, এবং সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা বলে। বিজেপির এই অবস্থান সেই নীতির সরাসরি লঙ্ঘন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে বিজেপির এই অবস্থানকে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের কৌশল হিসেবে দেখছেন। একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, “মুসলিমদের টিকিট না দেওয়া মানে ১৫ কোটি মানুষকে রাজনৈতিকভাবে উপেক্ষা করা।
এটা কি ভারতের গণতন্ত্রের জন্য গর্বের বিষয়?” অন্যদিকে, বিজেপির সমর্থকরা দাবি করছেন যে, দলটি তাদের মূল ভোটারদের প্রতি দায়বদ্ধ, এবং এটি একটি বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তবে, এই বক্তব্য দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি অস্বস্তি ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।


