ভারতের রাজনৈতিক মঞ্চে আবারও উত্তেজনা । বিজেপি সরকার এবং কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের মধ্যে চলছে তীব্র বাদানুবাদ, যার কেন্দ্রবিন্দু হলো গুগলের বিশালকায় এআই হাব প্রকল্প। গতকালই বিশাখাপত্তনমে গুগলের ১৫ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা) ইনভেস্টমেন্টের ঘোষণা হয়েছে, যা কর্ণাটকের সিলিকন ভ্যালি বেঙ্গালুরুর জন্য একটা বড় ধাক্কা।
বিহার ভোটে আসন বণ্টন নিয়ে রাহুল-লালুর জোর বৈঠক
বিজেপি নেতারা এই সুযোগে সিদ্দারামাইয়া সরকারকে কটাক্ষ করে বলছেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-কে টার্গেট করার ব্যস্ততায় তারা এত বড় ইনভেস্টমেন্ট হারিয়েছে। এই ঘটনা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা বলছে না, বরং দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে ইনভেস্টমেন্টের যুদ্ধকেও উন্মোচিত করছে।গুগলের এই প্রকল্পটি কোনো সাধারণ ঘোষণা নয়।
এটি কোম্পানির আমেরিকার বাইরে সবচেয়ে বড় ইনভেস্টমেন্ট, যা পরবর্তী পাঁচ বছরে এক গিগাওয়াট স্কেলের এআই ডেটা সেন্টার গড়ে তুলবে। অন্ধ্র মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু এটাকে ‘রাজ্যের এবং দেশের জন্য ঐতিহাসিক মাইলফলক’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর আইটি মন্ত্রী নরা লোকেশ বলেছেন, “যদি তারা অদক্ষ হয়, তাহলে আমরা কী করব? তাদের নিজস্ব শিল্পপতিরা বলছেন, কর্ণাটকের পরিকাঠামো খারাপ, বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে।”
অন্ধ্র সরকার সাবসিডি দেওয়ায় সরকারি জমি, বিদ্যুৎ ট্যারিফে ছাড় এবং জিএসটি রিফান্ডের মতো সুবিধা দিয়ে গুগলকে আকৃষ্ট করেছে। এর ফলে বিশাখাপত্তনমে ৩০ হাজারের বেশি চাকরি সৃষ্টি হবে এবং বার্ষিক ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনাকে ‘প্রযুক্তির গণতান্ত্রিকীকরণের শক্তিশালী হাতিয়ার’ বলে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
কিন্তু কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের জন্য এটা একটা কালো অধ্যায়। জনতা দল (সেকুলার) বা জেডিএস, যা বিজেপির সঙ্গে জোটে, সরাসরি সিদ্দারামাইয়া সরকারকে দায়ী করেছে। তাদের বক্তব্য, “কর্ণাটক ১.৩ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প হারিয়েছে উপেক্ষার কারণে। আইটি মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়গে এবং উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের অদক্ষতায় বেঙ্গালুরুর সিলিকন সিটির ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
বিজেপি নেতারা যোগ করছেন, সিদ্দারামাইয়া সরকারের শক্তি আরএসএস-এর বিরুদ্ধে ব্যয় হচ্ছে, যার ফলে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যর্থতা ঘটছে। আইটি মন্ত্রী খাড়গে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে আরএসএসের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি করেছিলেন, যাতে হুমকির অডিও স্যাম্পল পর্যন্ত উপস্থাপন করেছেন। বিজেপি এটাকে ‘পলিটিক্যাল গিমিক’ বলে খারিজ করেছে।