নির্বাচনী স্বচ্ছতায় চির ধরাচ্ছে ERO নিয়োগের অনিয়ম, বিস্ফোরক শুভেন্দু

কলকাতা, ১০ অক্টোবর: পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা রক্ষার ক্ষেত্রে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhkari) সরাসরি নির্বাচন কমিশন…

BJP Leader Demands EC Action Over Alleged ERO Appointment Violations in Bengal

কলকাতা, ১০ অক্টোবর: পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা রক্ষার ক্ষেত্রে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhkari) সরাসরি নির্বাচন কমিশন (ECI)-এর কাছে অভিযোগ জানিয়ে দাবি করেছেন, রাজ্যজুড়ে Electoral Registration Officer (ERO)পদে গুরুত্বপূর্ণ অনিয়ম চলছে। তাঁর দাবি, এই অনিয়ম শুধু গাইডলাইন লঙ্ঘন নয়, বরং গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভিত্তিকে নাড়া দিচ্ছে।

Advertisements

শুভেন্দু অধিকারী তাঁর সোশ‌্যাল হ্যান্ডলে পোস্ট করে লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গে ২২৬ জন ERO-র নিয়োগ হয়েছে, যাঁদের অনেকেই ECI-এর নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করেন না। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, SDM (Sub Divisional Magistrate), SDO (Sub Divisional Officer) অথবা RDO (Revenue Divisional Officer) পদমর্যাদার অফিসাররাই ERO পদে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক জেলা শাসক (District Magistrate) এই গাইডলাইনকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে জুনিয়র অফিসারদের ERO হিসেবে নিযুক্ত করছেন। এর ফলে, যোগ্য WBCS (Executive) আধিকারিকদের পাশ কাটিয়ে, অনভিজ্ঞ এবং নিম্নপদস্থ কর্মীরা এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিযুক্ত হচ্ছেন যা প্রত্যক্ষভাবে ভোটার তালিকার নির্ভুলতা ও নির্বাচনী স্বচ্ছতার উপর প্রভাব ফেলে।

শুভেন্দু অধিকারীর মতে, এই অনিয়ম নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে। ERO-র প্রধান কাজ হলো ভোটার তালিকার সংরক্ষণ, সংশোধন এবং নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা। এটি একটি প্রশাসনিক দায়িত্ব, যা অভিজ্ঞতা ও উচ্চপদস্থতা দাবি করে। সেখানে জুনিয়র বা অনভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের এই পদে বসানো মানেই দায়িত্বে অবহেলা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিয়োগের আশঙ্কা তৈরি করা।

নির্বাচন কমিশন পূর্বেই স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল—ERO পদে মাত্র তিনটি নির্দিষ্ট পদমর্যাদার (SDM/SDO/RDO) অফিসারদেরই নিয়োগ করা যাবে। এই নির্দেশের মাধ্যমে ECI চেয়েছিল, ভোটার তালিকার মতো সংবেদনশীল বিষয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নিয়োজিত থাকুন। কিন্তু শুভেন্দুর অভিযোগ অনুযায়ী, রাজ্য প্রশাসন এই নির্দেশকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেছে এবং অবৈধভাবে জুনিয়র কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে। এর ফলে শুধুমাত্র কমিশনের নির্দেশ লঙ্ঘনই হয়নি, বরং ভোটার তালিকার নির্ভুলতা ও পক্ষপাতহীনতা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, বিরোধী দলনেতা নির্বাচন কমিশনের প্রতি কঠোর হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে অবিলম্বে ECI-এর নির্দেশ মেনে নতুন করে ERO নিয়োগ করতে হবে, এবং যাঁরা নির্দেশ লঙ্ঘন করে নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের অপসারণ করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।