বক্সার: আসন্ন নির্বাচনে বড় চমক দিল বিজেপি। বক্সার লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রাক্তন আইপিএস অফিসার আনন্দ মিশ্রকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দল। ঘোষণার পরই রাজনৈতিক মহলে নতুন উদ্দীপনা ছড়িয়েছে। কঠোর শৃঙ্খলা, নিষ্ঠা ও কর্মনিষ্ঠার জন্য পরিচিত এই প্রাক্তন পুলিশ অফিসার এখন ভোটযুদ্ধের ময়দানে পদার্পণ করছেন এক নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে।
সংবাদ মাধ্যমকে কে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে আনন্দ মিশ্র বলেন, “আমার জন্য এটি এক গভীর বিনম্রতার মুহূর্ত যে দল আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে এবং আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে। দলের প্রত্যেক কর্মী, স্থানীয় নেতা ও এনডিএ-র সহযোগিতায় আমি ‘নতুন বক্সার’ গড়ার প্রচেষ্টা শুরু করব। এই নির্বাচন শুধু ভোটের লড়াই নয়, এটি হবে মানুষের অংশগ্রহণের এক উৎসব।”
মেসির আগেই ভারতের আসছেন ‘CR7’! কবে এবং কোথায় খেলবেন ম্যাচ?
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সংগঠন খুব শক্তিশালীভাবে ময়দানে নামবে। আমি সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী, আমরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে এই আসনে জয় আমাদেরই হবে।” প্রাক্তন আইপিএস হিসেবে আনন্দ মিশ্রের পরিচিতি অনেক পুরনো।
পুলিশ বাহিনীতে তাঁর সময়কালে তিনি দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে যেমন সক্রিয় ছিলেন, তেমনি সমাজে মানবিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজেও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বক্সারে তাঁর প্রার্থিতা বিজেপির একটি “স্ট্র্যাটেজিক মুভ”—যা সংগঠন ও জনমতের সমীকরণে নতুন ভারসাম্য আনতে পারে।
বক্সার, ঐতিহাসিকভাবে একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র, যেখানে স্থানীয় সমস্যা যেমন বেকারত্ব, কৃষি অবকাঠামোর অভাব, শিল্পায়নের ঘাটতি—এ সবই নির্বাচনের মূল ইস্যু। আনন্দ মিশ্র তাঁর বক্তব্যে এই বিষয়গুলোকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি চাই বক্সারের যুব সমাজ নিজেদের স্বপ্ন গড়ার সুযোগ পাক। কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে উন্নয়নের অগ্রাধিকারে রাখতে চাই।”
স্থানীয় বিজেপি কর্মীরাও নতুন প্রার্থীর প্রতি উচ্ছ্বসিত। দলের এক ব্লক সভাপতি বলেন, “আনন্দজি মাঠের মানুষ। উনি মানুষের কাছে যাবেন, তাঁদের কথা শুনবেন। বক্সার এমন একজন নেতার অপেক্ষায় ছিল যিনি কাজ করে দেখাবেন। অন্যদিকে, বিরোধীরা বলছে, “বক্সারে নতুন মুখ এনে বিজেপি লোক দেখানো রাজনীতি করছে।” যদিও আনন্দ মিশ্রের আত্মবিশ্বাসী সুরে স্পষ্ট—তিনি রাজনীতিতে এলেন দায়িত্ববোধ থেকে, কুর্সির লোভে নয়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বক্সারের এই লড়াই এখন আরও আকর্ষণীয় হতে চলেছে। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা আর মাঠের বাস্তবতার সমন্বয়ে আনন্দ মিশ্র বিজেপির হয়ে কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
তবে একথা বলা যায়, তাঁর প্রার্থিতা বিজেপি সংগঠনে নতুন উদ্যম এনে দিয়েছে। শেষমেশ আনন্দ মিশ্রের কথায়, “এই নির্বাচন কেবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, এটি হবে জনগণের সহযোগিতায় গড়া এক উন্নয়নের অভিযাত্রা।”