অঙ্গরাজ্য জয় করেই রাত জেগে বঙ্গ জয়ের ছক বিজেপির

bjp-bengal-strategy-after-bihar-victory

কলকাতা, ১৫ নভেম্বর: বিহারে বিজেপির জোরদার জয়ের উচ্ছ্বাস যখন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, তখনই দলীয় কৌশলে দেখা গেল এক ভিন্ন ছবি। বিজয়ের ঢেউয়ের মধ্যে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ নতুন লক্ষ্য ঠিক করে ফেলেছে। এবারের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। নির্বাচন শেষ, কিন্তু রাজনৈতিক যুদ্ধ থেমে নেই।

Advertisements

বিহারের ফল ঘোষণার রাতেই বিজেপির জাতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা ও হোম মিনিস্টার অমিত শাহের নির্দেশে সংগঠনের অন্যতম কৌশলবিদ ভূপেন্দ্র যাদব কলকাতায় পৌঁছে যান। গভীর রাতে তিনি রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক করেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, যিনি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত, এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

   

নির্বাচন ভরাডুবির পর নীরবতা ভঙ্গ করে কি বার্তা তেজস্বীর

বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল, বিহারের সাফল্যের মনোবল ধরে রেখে বাংলায় পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করা। দলের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, “এটাই বাস্তব রাজনীতি। একটা নির্বাচন শেষ মানেই কাজ শেষ নয়। পরের যুদ্ধের প্রস্তুতি তখনই শুরু করতে হয়।”

দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিহারের জয়ের পর দলের মধ্যে আস্থা বেড়েছে, এবং সেই মনোবল সরাসরি বাংলায় কাজে লাগাতে চায় তারা। রাজ্য নেতৃত্বকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে “উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হবে পশ্চিমবঙ্গ।”

Advertisements

বিপ্লব দেব পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই সংগঠনের সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্কও দলের ভিতরে সমন্বয়কে মজবুত করছে বলে মত অনেক নেতার। এই বৈঠকে দুজনেই পর্যালোচনা করেন কোন কোন জেলায় ভোটে ক্ষতি হয়েছে, কোথায় বিজেপির উত্থান হয়েছে, এবং কোন এলাকায় আউটরিচ বাড়ানো প্রয়োজন।

অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরে দেখা গেছে অন্য ধরনের রাজনৈতিক চর্চা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৃণমূলসহ বিরোধী কিছু নেতারা অভিযোগ তুলছেন বিজেপি ভোটযন্ত্র (EVM) নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করে, সরকারি দাপট দেখিয়ে, এবং মিডিয়াকে হাতিয়ার বানিয়ে নির্বাচনে সুবিধা নেয়।তবে বিজেপি এক নেতৃত্বের মতে “বিজেপি যখন রাতদিন পরের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, বিরোধীরা তখন শুধু টুইটারে ‘EVM ফ্রড’ বলে কাঁদে। এতে রাজনীতি হয় না।”

এই ঘটনাগুলি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন এখনও দূরে হলেও বিজেপি যে এখন থেকেই ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে নেমে পড়েছে, তা স্পষ্ট। তার ওপর বিহারের জয় বিজেপির সংগঠনে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে, যা বাংলাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের অনুমান।