বেঙ্গালুরু: কর্ণাটকের রাজনৈতিক মহলে যেন একটা বোমা ফাটল। বিজেপি নেতা বি. শ্রীরামুলু মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার উপর তীব্র অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন বলেছেন, “সিদ্দারামায়া তার চেয়ার বাঁচাতে এবং বিহার নির্বাচনে কংগ্রেসের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে মন্ত্রীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি টাকা আদায় করেছেন।
কর্ণাটককে তারা পরিণত করেছে বিহারের ‘এটিএম’-এ!” এই অভিযোগ শুধু সিদ্দারামাইয়াকে নয়, উপমুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমারসহ পুরো কংগ্রেস ক্যাবিনেটকেও তুলোধুনো করেছে। বিজেপির দাবি, এই অর্থ সংগ্রহের ফলে কর্ণাটকের প্রশাসনে দুর্নীতির জলপ্রপাত বইছে। কিন্তু কংগ্রেস এই অভিযোগকে ‘মিথ্যা প্রচার’ বলে উড়িয়ে দিয়ে প্রমাণ দাবি করেছে।
SIR ইস্যুতে বাড়ছে বিরোধ! শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ক্ষোভে ফুঁসছে একাধিক রাজ্য
বিহার নির্বাচনের আগে এই রাজনৈতিক যুদ্ধ কি শুধু ভোটের খেলা, নাকি সত্যিকারের দুর্নীতির প্রকাশ? দেশের রাজনৈতিক দৃষ্টি এখন কর্ণাটকের দিকে।শ্রীরামুলু, যিনি নিজে বিজেপির শীর্ষ নেতা এবং সিদ্দারামাইয়ার পুরনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, তার বক্তব্যে বলেছেন, “সিদ্দারামাইয়া সম্প্রতি একটা গোপন ডিনার মিটিং ডেকেছিলেন, যেখানে প্রত্যেক মন্ত্রীকে আলাদা করে টার্গেট দেওয়া হয়েছে।
তাদের বিভাগের অধীনে থাকা অফিসারদের থেকে ‘রিনিউয়াল’ নামে অর্থ আদায় করে বিহারে পাঠানোর নির্দেশ। এটা ৩০০ কোটি ছাড়িয়েছে, যাতে রাহুল গান্ধীর নির্বাচনী প্রচার চলবে।” তিনি উল্লেখ করেছেন, জেল করা কংগ্রেস এমএলএ কে.সি. বীরেন্দ্র (পাপ্পি) নিজে ৩০০ কোটি টাকা দিয়ে মন্ত্রী পদ চেয়েছিলেন, যা বিহারে পাঠানো হয়েছে।
ইডির তদন্তে ২০০০ কোটি টাকার অবৈধ বেটিং লেনদেন বেরিয়েছে, যা এই চক্রের সাথে যুক্ত বলে দাবি। শ্রীরামুলু বলেছেন, “সিদ্দারামায়া নভেম্বরে চেয়ার হারাবেন বলে জেনে এই তাড়াহুড়ো। কিন্তু কর্ণাটকের ট্যাক্সপেয়ারদের টাকা বিহারে পাঠিয়ে তারা রাজ্যকে লুটছে।” এই অভিযোগে বিজেপির অন্য নেতারাও যোগ দিয়েছেন জগদীশ শেত্তার এবং বি.ওয়াই. রাঘবেন্দ্র বলেছেন, “কংগ্রেসের মন্ত্রীরা এখন ফান্ডরেইজিং-এর ব্যবসায় মেতেছে, কর্ণাটকের অফিসাররা চাপে আছেন।”
কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ খারিজ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামায়া সরাসরি বলেছেন, “কর্ণাটক থেকে কোনো রাজ্যের নির্বাচনে ৫ পয়সাও পাঠাইনি, বিহারেও পাঠাব না। এটা বিজেপির মিথ্যা প্রচার।” উপমুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমার আরও জোর দিয়ে বলেছেন, “বিজেপির নেতারা ‘হিট অ্যান্ড রান’ করে।
প্রমাণ দিন, না হলে তারা মিথ্যাবাদী। বিজেপির আমলেও কর্ণাটক থেকে জাতীয় প্রচারে টাকা লুট হয়েছে।” কংগ্রেসের অন্য নেতা মলিকার্জুন খড়গে বলেছেন, “বিজেপি কর্ণাটককে দিল্লির ‘প্রাইভেট বিজনেস’ বলে দেখে। এটা তাদের পুরনো কৌশল দুর্নীতির অভিযোগ করে নিজেদের বাঁচানো।” কংগ্রেসের দাবি, এই অভিযোগ বিহার নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারকে দুর্বল করার চক্রান্ত।


