পটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের উত্তপ্ত প্রচারের মাঝে এমন এক ঘটনা ঘটেছে যা রাজনৈতিক মহলে প্রবল আলোড়ন তুলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এক ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি অল্পবয়সী শিশু আরজেডি প্রার্থীর মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলছে, “তেজস্বী ভাইয়া আসবে, আমরা কাট্টা (স্থানীয় পিস্তল) নিয়ে ঘুরব!”
Look at this 10-year-old boy from Bihar. He is an RJD supporter, wants to become a gangster when he grows up, wants to loot and plunder after becoming a gangster not a doctor or engineer. The people around are laughing.
The difference is clear! pic.twitter.com/X1SlX8wIKI
— Megh Updates 🚨™ (@MeghUpdates) November 5, 2025
এই বক্তব্য শোনা মাত্রই মঞ্চে উপস্থিত জনতার মধ্যে হাসির রোল ওঠে, তবে ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধী শিবির তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অনেকেই বলছেন, “এই দৃশ্যই প্রমাণ করছে যে আরজেডি ও ইন্ডি অ্যালায়েন্স জিতলে বিহারে ফের ‘গুণ্ডারাজ’ ফিরে আসবে।”
শালবনি ITI-তে চাকরির সুযোগ দিল Maruti Suzuki
ভিডিওটি প্রথমে স্থানীয় এক সাংবাদিক সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। তাতে দেখা যায়, একটি নির্বাচনী সভায় আরজেডি প্রার্থী মঞ্চে উপস্থিত, এবং তাঁর পাশে এক ছোট ছেলে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলে ওঠে, “তেজস্বী ভাইয়া জয় হো, আমরা কাট্টা নিয়ে ঘুরব!” — এই এক মুহূর্তেই রাজনৈতিক তাপমাত্রা চরমে ওঠে। বিজেপি নেতারা ভিডিওটি রিটুইট করে প্রশ্ন তুলেছেন, “এটাই কি তেজস্বীর নতুন বিহার? যেখানে শিশুরা মঞ্চে উঠে বন্দুক নিয়ে ঘোরার স্বপ্ন দেখে?”
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী গিরিরাজ সিং এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “এই ভিডিও বিহারের মানুষের চোখ খুলে দেবে। গুণ্ডারাজের ছায়া আবার ফিরে আসছে। যাঁরা ৯০-এর দশকের অরাজকতা ভুলে গিয়েছেন, তাঁরা এই দৃশ্য দেখুন।” বিজেপি মুখপাত্র অশ্বিনী চৌবে বলেন, “তেজস্বী যাদব এখন ‘ RJD রাজনীতি’-র পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাইছেন যেখানে গুলি, কাট্টা ও ভয়ই ছিল রাজনীতির হাতিয়ার। আজ একটি শিশুর মুখে এমন কথা শুনে মনে হচ্ছে সেই কালো অধ্যায় আবার ফিরে আসছে।”
তিনি আরও বলেন, “এটি শুধু একটি ভিডিও নয়, এটি মানসিকতার প্রতিফলন। যে পরিবার রাজনীতিতে হিংসা ও দখলদারিকে সংস্কৃতি বানিয়েছিল, তারা এখন নতুন প্রজন্মের মনেও সেই বিষ ছড়াচ্ছে।” তবে আরজেডি পক্ষ থেকে এই অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে। দলের এক মুখপাত্র বলেন, “এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। শিশুদের এমনভাবে ব্যবহার করে বিরোধীরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আমাদের দল শিক্ষিত, সচেতন বিহারের স্বপ্ন দেখে, অস্ত্রধারী বিহারের নয়।”
আরজেডির দাবি, ভিডিওটি বিকৃত করে ছড়ানো হয়েছে এবং এর সঙ্গে তেজস্বী যাদব বা কোনো প্রার্থীর সম্পর্ক নেই। বিহার নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটের আগে এই ভিডিওটি রাজ্যজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
একাংশের মতে, ভিডিওটি এনডিএ শিবিরকে প্রচারে বাড়তি সুবিধা দেবে, কারণ এটি ভোটারদের মনে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “বিহারের ভোট সবসময়ই আবেগনির্ভর। এমন ঘটনা ভোটারদের মনে ৯০-এর দশকের গুণ্ডারাজের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে — যা এনডিএর পক্ষে ইতিবাচক হতে পারে।”
বিহার নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদি প্রমাণিত হয় যে শিশু বা প্রার্থী নির্বাচনী নীতিনিয়ম ভঙ্গ করেছেন, তবে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ভিডিও যেন বিহারের রাজনৈতিক আবহে নতুন বারুদ ছড়িয়ে দিয়েছে। ভোটারদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে কি সত্যিই বিহারে উন্নয়নের নতুন অধ্যায় শুরু হবে, নাকি পুরনো অরাজকতার ছায়া আবার ফিরে আসবে?


