বিজেপি ক্ষমতায় আসলে রাস্তায় নামার হুমকি মুসলিমদের

পটনা: বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ছায়ায় একটি ভাইরাল ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে চাঞ্চল্য তৈরী করেছে। একজন মুসলিম যুবক ক্যামেরার সামনে স্পষ্টভাবে বলছেন, “যদি বিহারে ভারতীয় জনতা…

bihar-muslim-threat-bjp-viral-video-2025

পটনা: বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ছায়ায় একটি ভাইরাল ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে চাঞ্চল্য তৈরী করেছে। একজন মুসলিম যুবক ক্যামেরার সামনে স্পষ্টভাবে বলছেন, “যদি বিহারে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসে, তাহলে আমরা মুসলিমরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ জানাব।” এই কথা শুধু একটি বক্তব্য নয়, এটি একটি প্রকাশ্য হুমকি হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে, যা বিহারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত্তিকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে।

Advertisements

   

ভিডিওটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে এক্স হ্যান্ডেলে যেখানে বিজেপি সমর্থকরা এটিকে ‘সংখ্যালঘু হুমকির প্রমাণ’ বলে চিহ্নিত করছেন। মাত্র ২০ শতাংশ জনসংখ্যা নিয়ে এমন হুমকি যদি সংখ্যা বাড়ে কী হবে? এই প্রশ্ন উঠেছে হাজারো পোস্টে, যা নির্বাচনী ময়দানকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।ভিডিওটি প্রায় ১৬ সেকেন্ডের, যাতে যুবকটি একটি রাস্তার কোণে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। তার ভাষণের সুরে কোনো দ্বিধা নেই তিনি বলছেন, “আমরা সহ্য করব না।

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ত্রিবাহিনী মহড়ার জন্য NOTAM জারি

ভাজপার শাসন হলে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ হবে, রাস্তা আটকে দেব।” এটি শুধু একক বক্তব্য নয়; এর পেছনে লুকিয়ে আছে বিহারের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ক্ষোভ। বিহারে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১৭-২০ শতাংশ, যা নির্বাচনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে।

নিতীশ কুমারের জেডিইউ-আরজেডি জোট এই ভোটের উপর নির্ভরশীল, আর বিজেপি এখানে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে। গত কয়েক মাসে বিহারে রামনবমীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গো-রক্ষকদের হামলা এসব ঘটনা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অসুরক্ষার অনুভূতি জাগিয়েছে। এই ভিডিও সেই ক্ষোভেরই প্রকাশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিজেপির পক্ষ থেকে এই ভিডিওকে নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া। পাটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং বললেন, “এটি গণতন্ত্রের উপর আঘাত। সংখ্যালঘুরা ভোটের নামে হুমকি দিচ্ছে, কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় এলে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনবে।” তার কথায় ইঙ্গিত রয়েছে ২০২৩-এর রামনবমী দাঙ্গায় বিজেপির হামলার দিকে, যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, “দাঙ্গাকারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে দেব।”

এরপর থেকে বিহারে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বেড়েছে। অপরদিকে, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এটিকে ‘বিজেপির ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করছেন। তিনি বললেন, “এই ভিডিও ফেক হতে পারে, বিজেপি নির্বাচনের আগে মুসলিম ভোট ভাগ করতে চায়। বিহারের মানুষ শান্তি চায়, হুমকি নয়।”

এই ঘটনা বিহারের রাজনীতিকে নতুন মোড় দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় মুসলিম ভোটারদের নাম কাটার অভিযোগ উঠেছে, যা ওয়াইসী ‘বিজেপির হয়রানি’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন বিহারের সিয়াসত ঐতিহাসিকভাবে সাম্প্রদায়িকতায় বিভক্ত ১৯৮৯-এর ভাগলপুর দাঙ্গা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গো-লিঞ্চিং পর্যন্ত। বিজেপির উত্থানের সাথে সাথে মুসলিমদের উপর হামলা বেড়েছে, যা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও আলোচিত।

Advertisements