বিহার নির্বাচনে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ নিয়ে বিস্ফোরক IPL চেয়ারম্যান

bihar-election-result-rajiv-shukla-controversy-news

পটনা: বিহার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই রাজনৈতিক পারদ দ্রুত বেড়ে চলেছে (Bihar election)। ফলাফলকে কেন্দ্র করে বিরোধী মহলে ক্ষোভ যেন উথাল-পাথাল। সেই আবহেই সরাসরি অভিযোগের সুরে কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশনকে এক হাত নিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাজীব শুক্লা। তাঁর অভিযোগ “ভোট কেনাবেচা চলছে প্রকাশ্যে। নির্বাচন কমিশন থেকে সরকারি প্রশাসন সবাই ওদের পক্ষেই কাজ করছে।”

Advertisements

রবিবার রাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজীব শুক্লা বলেন, “নির্বাচনের সময়ে যে হারে টাকা ঢুকেছে এবং যেভাবে ভোট কেনাবেচা হয়েছে, তা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। কমিশনকে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেই। উল্টে তাঁরা শাসকদলের সঙ্গেই হাত মিলিয়ে চলেছে।” তাঁর দাবি, টাকা ও প্রশাসনিক প্রভাব এই দুইয়ের জোরেই বিহারের মাটিতে গণতন্ত্র বদলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।

   

রাজনীতির বাতাসে এই অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কিন্তু নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিরোধীদলীয় সাংসদের এমন সরাসরি বক্তব্য আরও বড় রাজনৈতিক ঝড় তুলেছে। রাজীব শুক্লা আরও জানান, সোমবার বিরোধী শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে, যাকে তিনি ‘SIR মিটিং’ বলে উল্লেখ করেন। যেখানে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করা হবে। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য “আমাদের লড়াই চলবে। গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই থেকে আমরা সরব না।”

বিহারের নির্বাচনী যুদ্ধ বরাবরই তীব্র উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জোট-রাজনীতির অঙ্ক বদলালে ফলাফলে বড় প্রভাব পড়ে। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ ভোটের শেষ দিন থেকে শুরু করে গণনা অবধি একাধিক অনিয়ম চোখে পড়েছে।

একাধিক বুথ থেকে অভিযোগ ওঠে ভোটারদের প্রভাবিত করা, EVM-এর ত্রুটি ও প্রশাসনিক পক্ষপাত নিয়ে। যদিও নির্বাচন কমিশন এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানায় “গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে হয়েছে।”

Advertisements

রাজীব শুক্লার অভিযোগের কেন্দ্রে ছিল আরও একটি বড় ইঙ্গিত “সরকারের পুরো যন্ত্রই একদিকে ঝুঁকে গেছে।” কংগ্রেসের দাবি, প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে বহু আসনে বিরোধীদের এজেন্টদের বাইরে বসিয়ে দেয়। যেসব কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল, সেখানেও নজরদারি ছিল ‘একপেশে’।

এদিকে বিজেপির তরফে এই অভিযোগকে ‘পরাজয়ের হতাশা’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সামাজিক মাধ্যমে এই মন্তব্য নিয়ে তুমুল আলোড়ন ছড়িয়েছে। সমর্থকরা বলছেন বিহারে গণতন্ত্র আক্রান্ত, আর বিরোধীরা সঠিক সময়েই এই স্বর তুলেছেন। অন্যদিকে শাসকদলের সমর্থকদের বক্তব্য পরাজয় মেনে নিতে না পেরে ‘অজুহাত’ দেওয়া শুরু করেছে কংগ্রেস।

কিন্তু প্রশ্ন ওঠে এই অভিযোগ কি শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য, নাকি এর পিছনে সত্যিই বড় কোনও ইঙ্গিত লুকিয়ে রয়েছে? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, রাজীব শুক্লার অভিযোগের জোর বাড়লে বা প্রমাণ সামনে এলে বিহারে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। আর অন্য অংশের মতে, এটি বিরোধীদের পরবর্তী আন্দোলনের প্রস্তুতি মাত্র।

এখন দেখার বিষয় সোমবার বিরোধী জোটের বৈঠকে কী রণকৌশল ঠিক হয়। রাজীব শুক্লার কথায়, “এখনই থামার সময় নয়। আমরা আদালত, কমিশন সব জায়গায় লড়াই চালাব।” তার মানে, বিহার নির্বাচন ঘিরে অধ্যায় এখানেই শেষ হচ্ছে না। বরং নতুন রাজনৈতিক লড়াইয়ের সূচনা হতে চলেছে বিহারের মাটিতে।