বিধানসভা নির্বাচনের আসন বন্টনে নয়া চমক NDA র

bihar-assembly-election-bjp-first-list-nda-seat-sharing-2025

বিহারের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের শুরু হলো ভোটের উত্তাপ। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে কার্যত শুরু হয়ে গেছে এনডিএ ও মহাগঠবন্ধনের লড়াই। রবিবার বিজেপি তাদের প্রথম দফার ৭১ জন প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এদিনই রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী, বিজয় কুমার সিংহসহ একাধিক হেভিওয়েট নেতার নামও ঘোষণা করা হয়।

আমেরিকার মাটিতে বিশাল ব্ল্যাক হোল, এটি পর্যবেক্ষণের জন্য অর্ধ ডজন ট্যাঙ্ক মোতায়েন

Advertisements

বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী তারাপুর কেন্দ্র থেকে লড়বেন, অন্যদিকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিংহ প্রার্থী হয়েছেন লখিসরাই থেকে। এছাড়া রাজ্য মন্ত্রী নিতিন নবীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ব্যাংকিপুর আসন থেকে, আর প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী রেণু দেবী প্রার্থী হয়েছেন বেত্তিয়া থেকে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দুই দফায়—৬ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর, আর ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর।

এরই সঙ্গে এনডিএ-র পক্ষ থেকে আসন বন্টনের ফর্মুলাও ঘোষণা করা হয়েছে। ২৪৩ সদস্যের বিধানসভায় বিজেপি ও জেডিইউ—উভয়েই ১০১টি করে আসনে লড়বে, বাকি আসনগুলি দেওয়া হয়েছে ছোট আঞ্চলিক দলগুলিকে।

এই সমঝোতা তৈরি হয়েছে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত একাধিক বৈঠকের পর, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সভাপতি জে.পি. নাড্ডা, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী, উপেন্দ্র কুশওয়াহা এবং জিতন রাম মাঁঝি।

এই প্রথমবারের মতো এনডিএ জোটের দুই প্রধান দল—জেডিইউ ও বিজেপি—সমান সংখ্যক আসনে লড়াই করছে, যা বিহারের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন দৃষ্টান্ত। পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি বিজেপির আত্মবিশ্বাস এবং জেডিইউ-র আপসের প্রতিফলন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে সামনে রেখে বিজেপি এখন নিজেকে রাজ্যের সমান শক্তি হিসেবে তুলে ধরছে।

মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, যিনি নিজের পঞ্চম টানা মেয়াদের জন্য লড়ছেন, জানিয়েছেন যে এই আসন বন্টন “আপন সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে” হয়েছে এবং জোটে কোনো মতভেদ নেই। তাঁর কথায়, “আমরা একসঙ্গে রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করছি।

জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে, আবারও রাখবে।” এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরী বলেন, “এই নির্বাচন উন্নয়ন বনাম দুর্নীতির লড়াই। আমরা বিহারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে বিহার হবে আত্মনির্ভর রাজ্য।”

ছোট দলগুলির মধ্যে লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস), যেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ান, পেয়েছে ২৯টি আসন। যদিও আগের নির্বাচনে তিনি এনডিএর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জেডিইউ-কে বড় ক্ষতি করেছিলেন, এবার তিনি পুনরায় জোটে ফিরে এসেছেন। অন্যদিকে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (জিতন রাম মাঁঝি) ও রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা (উপেন্দ্র কুশওয়াহা)-কে ৬টি করে আসন দেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনডিএ এবার একটি সমতা ও ভারসাম্যের প্রচেষ্টা নিয়েছে, যাতে কোনো অংশীদার দল নিজেকে উপেক্ষিত মনে না করে। তবে, রাজ্যের বিরোধী দল আরজেডি ইতিমধ্যেই বিজেপি-জেডিইউ-র এই সমান আসন বন্টনকে “ভিত্তিহীন রাজনৈতিক নাটক” বলে আখ্যা দিয়েছে। আরজেডি মুখপাত্রর দাবি, “নীতীশ কুমার এখন বিজেপির ছায়া সরকার চালাচ্ছেন, জনগণ এর উত্তর দেবে ভোটে।”

দুই দফার এই নির্বাচনে মোট ২৪৩টি আসনে লড়াই হবে, যেখানে উন্নয়ন, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নই মূল ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে। বিহারবাসীর নজর এখন নভেম্বরের দিকে—কে বসবে পাটনায় মুখ্যমন্ত্রীর আসনে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

Advertisements