পটনা: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে কামাল করছেন ভোটাররা। ১১ নভেম্বর, ২০২৫। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় এবং চূড়ান্ত দফা। ২২টি জেলায় ১২২টি আসনের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য ৩.৭ কোটি ভোটার মাঠে নেমেছেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪৭.৬২% ভোটার ভোট দিয়েছেন। এটা প্রথম দফার (যেখানে দুপুর ১টায় ছিল ৪২.৪৩%) তুলনায় অনেক বেশি।
গরমে ঘাম ছুটলেও, লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষের উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছে, এবার রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা। কিষাণগঞ্জে সর্বোচ্চ ৫১% ছাড়িয়েছে, মধুবনীতে সবচেয়ে কম ৪২%। সীমান্তবর্তী সীমাঞ্চল অঞ্চলে মুসলিম এবং দলিত ভোটাররা নির্বাচনের ‘কিঙ্গমেকার’ হয়ে উঠেছেন।
রঞ্জিতে আগুন ঝরানো এই পেসারের পাশে সৌরভ, প্রশ্ন তুললেন নির্বাচকদের সিদ্ধান্তে
পশ্চিম চম্পারণ, পূর্ব চম্পারণ, সীতামড়ি, মধুবনী, সুপৌল, আরিয়া, কিশনগঞ্জ—এই জেলাগুলোতে ভোটিং চলছে জমজমাট। সকাল ৯টায় ছিল ১৪.৫৫%, ১১টায় উঠে এলো ৩১.৩৮%। দুপুরের গরমে স্লো হয়েছে একটু, কিন্তু নারীরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে বলছেন, “এবার পরিবর্তন আসবে।”
গয়ায় ৩৪%, জামুইয়ে ৩৩.৬৯%, বাঁকায় ৩২.৯১%—এমন সব জায়গায় ভোটাররা যেন বলছেন, ‘পরিবর্তন চাই’। প্রথম দফায় ৬৫% ছাড়িয়েছিল, আজও সেই লেভেল ছোঁয়ার আশা। কিন্তু চ্যালেঞ্জও কম নয়। জেহানাবাদের ঘোসী বুথে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝগড়া, পশ্চিম চম্পারণে একটা বুথে ইউনিফর্ম ছাড়া পুলিশের ঘটনা—এসব খবর এসেছে। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, সবকিছু নিয়ন্ত্রণে। ৪৫,৩৯৯টা বুথে ১,৩০২টা প্রার্থীর ভাগ্য ঠিক হচ্ছে, যার মধ্যে ১৩৬ জন নারী।
এই দফায় নিতীশ কুমার সরকারের ১২ জন মন্ত্রীর ভবিষ্যৎ ঝুলছে। জেডিইউ-বিজেপির এনডিএ বলছে, “আমরা শান্তি এবং উন্নয়নের পক্ষে।” নীতীশের পার্টি অফিসে গিয়ে তিনি ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছেন, “রেকর্ড তৈরি করুন।” প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “বিহারের মানুষ ইন্ডিয়া জোটকে ৬৫ ভোল্টের ঝটকা দিয়েছে।” অন্যদিকে, আরজেডির তেজস্বী যাদব বলছেন, “যুবকদের চাকরি, মাইগ্রেশন বন্ধ—এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।” মহাগঠবন্ধনের এই দাবি, যে তারা নিতীশের ২০ বছরের রাজত্ব ভাঙবে।
কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার পদযাত্রায় গিয়ে বলেছেন, “ভোটার লিস্টে কারচুপি হয়েছে, মাইনরিটি এবং মহিলাদের ভোট চুরি হচ্ছে।” প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজও মাঠে, তারা বলছে, “বিহারে বড় পরিবর্তন আসছে।” পাপ্পু ইয়াদব বলেছেন, “লোকেরা পরিবর্তন চায়।” সীমাঞ্চলে এই দফা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকায় মুসলিম ভোটাররা নির্বাচনের দিক নির্ধারণ করবেন। আসাদুদ্দিন ওয়াইসির এআইএমআইএমও মাঠে, তারা বলছে, “আমরা স্পয়লসপোর্ট খেলব না, কিন্তু ভোটারদের অধিকার রক্ষা করব।”
উপেন্দ্র কুশওয়াহার আরএলএম ছয়টা আসনে লড়ছে, কোয়েরি সম্প্রদায়ের ভোট ভাগ করতে পারে। মুকেশ সাহনির পার্টি নিষাদ এবং ইউনার্ডিসি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে, তারা বলছে, “যদি মহাগঠবন্ধন জিতে, আমি ডেপুটি সিএম হব।” এই সব দাবি-প্রতিদাবির মাঝে ভোটাররা যেন বলছেন, “আমরা দেখব কে সত্যি পরিবর্তন আনে।”


