পটনা, ১০ নভেম্বর: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে নজর এখন মোহনিয়া আসনে। এই আসনে মহাগঠবন্ধন কার্যত খেলাচ্যুত হওয়ায় লড়াইটি ত্রিমুখী হয়ে উঠেছে। একদিকে এনডিএ (NDA), অন্যদিকে বিএসপি (BSP) এবং তৃতীয় শক্তি হিসেবে লড়ছেন এক স্বতন্ত্র প্রার্থী। সংরক্ষিত আসন মোহনিয়া, কাইমুর (ভবুয়া) জেলার অন্তর্গত এবং বৃহত্তর সাসারাম লোকসভা আসনের অংশ। এখানে প্রধানত অনূ্যন জাতিভুক্ত ভোটারদের আধিপত্য।
এই আসনের বর্তমান বিধায়ক সঙ্গীতা কুমারী পূর্বে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD)-এর প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। তবে এবার তিনি বিজেপির (BJP) প্রার্থী হিসেবে পুনরায় লড়ছেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি সামান্য ব্যবধানে জয় পান—৬১,২৩৫ ভোটে জিতে, ৭.৬২ শতাংশ ব্যবধানে পরাজিত করেন বিজেপির নিরঞ্জন রামকে।
ফের SIR আতঙ্কে মৃত্যু! ‘কাগজ ছিল’ বলছে পরিবার
এদিকে, আরজেডির প্রার্থী শ্বেতা সুমনের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় মহাগঠবন্ধনের জোট প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী রবি শঙ্কর পাসওয়ানকে সমর্থন ঘোষণা করেছে জোট। রবি শঙ্কর বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়ক ছেদি পাসওয়ানের পুত্র।
আরজেডি দাবি করেছে, “একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে” নির্বাচন কমিশন শ্বেতা সুমনের মনোনয়ন বাতিল করেছে—অমিত শাহের প্রত্যক্ষ প্রভাবে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। তবে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তার জাতিগত সনদে অনিয়ম ধরা পড়ায় মনোনয়ন খারিজ করা হয়েছে।
এর পাল্টা আরজেডি জানায়, শ্বেতা সুমনের কাগজপত্র সরকারি নীতিমালা অনুযায়ীই জমা পড়েছিল। বহুজন সমাজ পার্টি (BSP)-র প্রার্থী হিসেবে ময়দানে নেমেছেন ওমপ্রকাশ নারায়ণ। এছাড়াও নতুন রাজনৈতিক শক্তি জন সুরাজ তাদের প্রার্থী হিসেবে গীতা দেবীকে মনোনীত করেছে।
মোহনিয়ার ভোটাররা বলছেন, এলাকার প্রধান সমস্যা হলো ট্রাফিক জ্যাম ও বন্যা। চাঁদনি চক এলাকায় একটি বাইপাস রাস্তা নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কারণ, স্বর্ণালী সড়ক সরাসরি এই শহরের মধ্য দিয়ে গেছে, যা প্রতিদিনই যানজটে জর্জরিত। পাশাপাশি বর্ষাকালে জল জমে রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আশেপাশের গ্রামীণ এলাকায় ফসলের ক্ষতি ঘটে। বেকারত্বও এই এলাকার বড় ইস্যু।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের নির্বাচনে মোহনিয়া বিধানসভায় মোট ভোটার ছিলেন ২,৭০,২৪৪ জন, যার মধ্যে ১,৬২,২৪৭ জন ভোট দেন। তার আগের ২০১৫ সালের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ২,৪৮,৪৪০ জন, যার মধ্যে ১,৪০,৬২০ জন ভোট দিয়েছিলেন।
প্রথম দফায় ৬ নভেম্বর বিহারের ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে ভোটদানের হার ছিল ৬৫.০৮ শতাংশ। দ্বিতীয় দফায় ১১ নভেম্বর রাজ্যের বাকি ১২২টি আসনে ভোট হবে, আর ফল ঘোষণা হবে ১৪ নভেম্বর। মোহনিয়া আসনে এবার কে হাসবেন শেষ হাসি সঙ্গীতা কুমারীর বিজেপি, ওমপ্রকাশের বিএসপি নাকি রবি শঙ্কর পাসওয়ানের স্বতন্ত্র প্রার্থিতা সেদিকেই তাকিয়ে বিহারবাসী।


