কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আবারও ঝড় উঠেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর তীব্র অভিযোগ করে বলেছে যে, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যকে উন্নয়নের মূলধারা থেকে দূরে রাখছেন। সাম্প্রতিক ইন্ডিয়ান ম্যারিটাইম উইক ২০২৫-এর সেশনে তামিলনাড়ু, কেরল, কর্ণাটকের মতো উপকূলীয় রাজ্যগুলো অংশ নিয়েছে।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মত একটি বড় উপকূলীয় রাজ্য অংশ নিচ্ছে না। বিজেপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে বলছেন, মমতা কখনোই চান না বাংলার মানুষের উন্নতি হোক। শুধু ভাতার উপর রাজ্য চালাতে চান মমতা এমন ও অভিযোগ করেছেন তারা। বিজেপি নেতৃত্বের মতে “মমতা বাঙালিদের নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাদের অবহেলায় রেখে। বিনিয়োগকারীদের দূরে রাখা তার রাজনীতির মূলমন্ত্র,” বলেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
ধসে গেল ৭৫ ফুট জগদ্ধাত্রী মণ্ডপ, আহত ৬
এই অভিযোগ রাজ্যের অর্থনীতি এবং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ককে নতুন করে উত্তপ্ত করে তুলেছে।ইন্ডিয়ান ম্যারিটাইম উইক ২০২৫, যা ২৭ থেকে ৩১ অক্টোবর মুম্বইয়ে চলছে, ভারতের অর্থনীতির জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। কেন্দ্রীয় নৌবন্দর, শিপিং ও জলপথ মন্ত্রক সর্বানন্দ সোনোয়ালের নেতৃত্বে এই অনুষ্ঠানে ৮৫টিরও বেশি দেশ থেকে ১ লক্ষেরও বেশি প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৯ অক্টোবর একটি বিশেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন। এই ইভেন্টে ১১টি রাজ্যের সেশন অন্তর্ভুক্ত রয়েছেগুজরাট, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্ণাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, আন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, আসাম এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। এই সেশনগুলোতে রাজ্যগুলো তাদের উপকূলীয় সম্পদ, বন্দর উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের নাম নেই!
বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বদের মতে “একটি উপকূলীয় রাজ্য হিসেবে বাংলার ২১৭ কিলোমিটার লম্বা সাগরতীর এবং কলকাতা, হালদিয়া, দিঘা বন্দরগুলো ম্যারিটাইম সেক্টরের জন্য সোনার খনি। কিন্তু মমতা সরকারের অসহযোগিতায় রাজ্যকে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটি বাঙালির ভবিষ্যতের সঙ্গে ছল করে খেলা।”বিজেপির এই অভিযোগের পটভূমি রাজ্যের দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক অবহেলা।
রাজনৈতিক মহল ও এই ঘটনায় সরব হয়েছে। তারা বলেছে ২০০৮ সালের সিঙ্গুর ঘটনা এখনও স্মৃতিতে তাজা। তখন বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। এই আন্দোলন টাটা মোটরসের ন্যানো কার প্রকল্প হতে দেয়নি। রতন টাটা চেয়ারম্যান হিসেবে প্রকল্পটি গুজরাটে স্থানান্তর করেন, যা বাংলার শিল্পায়নের একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায়।
তারা আরও বলেছেন, “সিঙ্গুরের পর থেকে মমতা বিনিয়োগকারীদের দূরে সরিয়ে রাখছেন। এখন ম্যারিটাইম উইকে অংশ না নেওয়া তারই চক্রান্ত। তিনি চান বাংলা গরিব থাকুক, যাতে বাঙালিরা তার রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে থাকে।”
বিজেপির মতে, এই ঘটনা রাজ্যের বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতার প্রধান কারণ। সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের ম্যারিটাইম সেক্টরে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগ কম, এবং হালদিয়া বন্দরের মতো সম্পদগুলো পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না।


