কলকাতা: রাজ্যে আবারও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামে আগুন। এবার বাড়ল দুধের দাম। নাম বদলে “বাংলার ডেয়ারি” হলেও, দাম বৃদ্ধিতে কোনও পরিবর্তন আসেনি বরং এক লাফে বেড়ে গেছে লিটারপ্রতি ₹৪। মাত্র দেড় বছরে মোট ₹১০ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সরকারি দুধের। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এখন তুঙ্গে।
দুধ মানে কেবল এক কাপ চা নয় বাঙালি পরিবারের প্রতিদিনের প্রাতরাশ, শিশুর পুষ্টি, বৃদ্ধ মায়ের পুষ্টিকর খাদ্য, এমনকি নিম্নবিত্তের একমাত্র প্রোটিন উৎসও এটি। কিন্তু সেই দুধ আজ অনেকের হাতের বাইরে। এক লিটার দুধের দাম যখন ৬০ টাকার ঘরে, তখন মজুরের দৈনিক আয় দিয়ে সংসারের খরচ টানা প্রায় অসম্ভব।
নয়া রূপে হাজির Ducati DesertX, হালকা অথচ অফ-রোডর জন্য অধিক সক্ষম
রাজ্য সরকার নাম বদলে “মাদার ডেয়ারি”কে করেছে “বাংলার ডেয়ারি”, কিন্তু দাম বৃদ্ধিতে কোনো রকম রেয়াত নেই। সরকার বলছে, বৃষ্টিপাতের কারণে গরুর খাদ্য উৎপাদন কমে গেছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এই যুক্তি মানতে নারাজ বিরোধীরা।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “তৃণমূল সরকার নাম বদল করে মানুষের চোখে ধুলো দিচ্ছে। কিন্তু নাম বদলেই পেট ভরে না। মানুষ আজ জানতে চায়—খরচ বাড়লে কৃষকের আয় কি বাড়ল? যে দুধ তারা কিনছে তার ন্যায্য মূল্য কি গরু পালকদের হাতে পৌঁছাচ্ছে?”
তিনি আরও বলেন, “মা-মাটি-মানুষের সরকার বলেছিল তৃণমূল, কিন্তু এখন মায়ের হাতে দুধ নেই, মাটির উৎপাদন নেই, মানুষের সাধ্য নেই। এবার সময় এসেছে শুধু দুধ নয়, সরকার বদলেরও।” অর্থনীতিবিদদের মতে, দুধের দামের এই ধারাবাহিক বৃদ্ধি রাজ্যের অর্থনীতির গভীর সমস্যাকে উন্মোচিত করছে। “বাংলার ডেয়ারি”-র দাম বেসরকারি সংস্থাগুলির তুলনায়ও এখন বেশি। একদিকে দুধের পাইকারি মূল্য কমছে না, অন্যদিকে গরু খাদ্যের দাম ও পরিবহন ব্যয় বাড়ছে। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে আনার কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সরকার অবশ্য বলছে, রাজ্যে দুধ উৎপাদন ও সরবরাহ শৃঙ্খলকে আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। পশুপালন দফতরের এক আধিকারিক জানান, “খাদ্যশস্যের দাম বৃদ্ধি ও বৃষ্টি-ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির কারণে সাময়িক দাম বৃদ্ধি হয়েছে। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি সামলে আনব।”
তবে জনমনে প্রশ্ন যদি প্রতি বছর একই অজুহাতে দাম বাড়ে, তাহলে সরকারের পরিকল্পনা কোথায়? “বাংলার ডেয়ারি” নামটি পরিবর্তনের রাজনৈতিক তাৎপর্য নিয়েও চলছে বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, নাম বদলে ব্যর্থতার মুখ ঢাকতে চাইছে সরকার। বাজারে এখন কথাটা ছড়িয়ে পড়েছে—“মা-মাটি-মানুষ” নয়, “মিল্ক-মনোপলি-ম্যানিপুলেশন” এটাই নাকি রাজ্যের নতুন স্লোগান।


