হায়দ্রাবাদ: হায়দ্রাবাদের জুবিলি হিলস অঞ্চলে একটি জমির বিতর্ক সাম্প্রতিককালে রাজনৈতিক ঝড় তুলেছে, যা কংগ্রেস সরকারের সততার উপর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। রহমত নগরের শাইকপেট এলাকায় ২,৫০০ বর্গযার্ডের একটি জমি, যা স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি অনুসারে কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, আসলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সম্পত্তি ছিল। অভিযোগ উঠেছে এই জমিটি অধগ্রহন করেছিলেন সদ্য তেলেঙ্গানার মন্ত্রী হওয়া প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আজহারউদ্দিন।
তেলাঙ্গানা ওয়াকফ বোর্ড এই জমিকে ওয়াকফ সম্পত্তি ঘোষণা করে চেয়ারম্যান আজহারউদ্দিনের নেতৃত্বে দখল করে নেয়, কিন্তু সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে এখন সেই জমি সেনার হাতে ফিরে এসেছে। এই ঘটনা শুধু প্রশাসনিক ভুল নয়, বরং রাজনৈতিক অ্যাপিজমেন্টের (সম্প্রদায়-ভিত্তিক রাজনীতি) একটা উদাহরণ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে জুবিলি হিলসের আসন্ন উপনির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।
ওয়াশিংটনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে কামব্যাক ভারতের
যদি সেনাবাহিনীর মতো শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিও এমনভাবে দখল হয়ে যায়, তাহলে সাধারণ নাগরিকদের জমির ভাগ্য কী হবে এই প্রশ্ন এখন সবার মনে জাগছে।ঘটনার সূত্রপাত হয় অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। তেলাঙ্গানা কংগ্রেস সরকার, মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির নেতৃত্বে, স্থানীয় মুসলিম নেতাদের সঙ্গে একটি সভায় এই জমিটি কবরস্থান হিসেবে বরাদ্দ করার ঘোষণা দেয়।
হায়দ্রাবাদের মাইনরিটিস ওয়েলফেয়ার মন্ত্রী অ্যাডলুরি লক্ষ্মণ এবং হায়দ্রাবাদ জেলার দায়িত্বশীল মন্ত্রী পোন্নাম প্রভাকর উপস্থিত ছিলেন। ওয়াকফ বোর্ডের আদেশপত্র (জি.ও.) অনুসারে, এই জমি গেজেট নোটিফিকেশনের ভিত্তিতে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষিত হয় এবং ইদগাহ ও চৌকান্দি মসজিদের কাছে কবরস্থান তৈরির জন্য বরাদ্দ করা হয়।
চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন নিজে স্থানীয় জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সঙ্গে মিটিং করে জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করেন এবং নির্মাণ শুরুর ঘোষণা দেন। এটি ছিল স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের দীর্ঘস্থায়ী দাবি, যা কংগ্রেস সরকার ‘মাইনরিটি ওয়েলফেয়ার’-এর নামে পূরণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দল স্থানে হাজির হয় এবং সব কাজ বন্ধ করে দেয়।
সেনাবাহিনীর দাবি স্পষ্ট এই জমি ডিফেন্স ডিপার্টমেন্টের সম্পত্তি, যা সেনা এলাকার কাছে অবস্থিত। অফিসাররা বলেন, কোনো কার্যকলাপ ছাড়া অনুমতি নেওয়া যাবে না। ওয়াকফ বোর্ডের দলকে জমি ছেড়ে যেতে বলা হয় এবং সেনা কর্মীরা সাইটে মোতায়েন হয়ে জনপ্রবেশ নিষিদ্ধ করে। হুসেনী পরে বলেন, “জমিটি গেজেটেড ওয়াকফ সম্পত্তি, আমরা সেনা অফিসারদের কাগজপত্র দেখিয়েছি।
এটা একটা প্রক্রিয়া, সমাধান হবে।” কিন্তু সেনা জোর দিয়ে বলছে, এই জমির সঙ্গে ওয়াকফ বোর্ডের কোনো যোগসূত্র নেই। এর ফলে কংগ্রেস সরকারের মুখে কালি লেগেছে। বিজেপি তেলাঙ্গানা সভাপতি রামচন্দ্র রাও বলেছেন, “কংগ্রেসের অ্যাপিজমেন্ট পলিটিক্সের ফল সেনার জমি কবরস্থান বানানোর চেষ্টা!
এটা জাতীয় নিরাপত্তার উপর আঘাত।” বিআরএস নেতা কে.টি. রামা রাও যোগ করেছেন, “আমরা ২০২২-এ মুসলিম ও খ্রিস্টান কবরস্থানের জন্য ১২৫ একর করে জমি দিয়েছিলাম, কংগ্রেসের এটা রাজনৈতিক স্টান্ট।” এমনকি এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসীও বলেছেন, তিনি হস্তক্ষেপ করে সমাধান করবেন।


