কলকাতা: রাজ্যের রাজনৈতিক আবহ এখন এমনিই উত্তপ্ত SIR বা ভোটার তালিকার সংশোধনকে কেন্দ্র করে। ঠিক এরকম আবহে আরও একবার মুখোমুখি তৃণমূল এবং বিজেপি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় অনুপ্রবেশ নিয়ে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন। ব্রাত্য বসু বলেছিলেন রোহিঙ্গারা মায়ানমার থেকে আসে যার পূর্ববর্তী নাম বার্মা।
তিনি আরও বলেন এই বার্মা থেকে মনিপুর হয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতে ঢুকেছিলেন নেতাজি এবিং তার আজাদ হিন্দ বাহিনী। এই মন্তব্যেই রীতিমত সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার তার এক্সহান্ডেলে পোস্ট করে কড়া ভাষায় এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী কিভাবে অনুপ্রবেশকারি জেহাদি রাখাইন প্রদেশ থেকে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নেতাজির তুলনা করেন।
SBI-তে ১০০ টিরও বেশি পদে নিয়োগ, এই তারিখের মধ্যে আবেদন করুন
ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়ে সুকান্ত বলেছেন আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনারা কোনও বিদেশি নয় তাঁরা ছিলেন ভারতেরই সন্তান, যারা ব্রিটিশ উপনিবেশের শৃঙ্খল ভাঙতে মায়ানমারের পথ ধরে ভারতের সীমান্তে প্রবেশ করেছিলেন। তাঁদের নেতৃত্বে ১৯৪৪ সালে মণিপুরের মৈরাং সীমান্ত দিয়ে ফৌজ ভারতের স্বাধীনতার লক্ষ্যে অভিযান শুরু করে। অন্যদিকে, রোহিঙ্গারা জেহাদ করতে গিয়ে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর তাড়া খেয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে বিজেপির দাবি।
সুকান্ত বলেন, “আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈনিকরা ভারতের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে প্রাণ দিয়েছিলেন, আর রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে ঢুকে দেশের নিরাপত্তা ও সমাজব্যবস্থাকে বিপন্ন করছে। এদের এক করে দেখা মানে ইতিহাস ও দেশপ্রেমের চরম অবমাননা।”
তিনি আরো বলেন যে আজ বাংলার শিক্ষামন্ত্রী নেতাজি এবং আজাদ হিন্দ ফৌজকে কে অনুপ্রবেশকারী বলেছেন এবং নিজেকে নেহেরুর জাত ভাই হিসেবে প্রমান করেছেন। কারণ নেহেরুও আজাদ হিন্দ ফৌজ কে অনুপ্রবেশকারী বলেছিলেন।
সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং তাঁর কাছ থেকে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানাই। তিনি যদি দেশের বীর সন্তানদের প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধাশীল হন, তবে অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে।”
এই মন্তব্যের পর থেকেই রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তৃণমূলের একাধিক নেতা বলছেন, বিজেপি “বক্তব্য বিকৃত করছে” এবং ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয়তাবাদী আবেগকে উস্কে দিতে চাইছে। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি ব্রাত্য বসু তার মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে শুধু যে নেতাজিকে অপমান করেছেন তা নয় অনুপ্রবেশকারীদের প্রাধান্য দিয়েছেন। নেতাজি মায়ানমার হয়ে ভারতে এসেছিলেন বলে রোহিঙ্গারাও এই দেশে অবাধে ঢুকতে পারে এমনটাই কি শিক্ষামন্ত্রী বোঝাতে চাইছেন এমনটাও প্রশ্ন অনেকের।
