নয়াদিল্লি: ভারতের নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় পর্যায় ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলে নতুন উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিহারে সফলভাবে সম্পন্ন হওয়া এই প্রক্রিয়া এখন ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু অসমকে এর বাইরে রাখা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেছেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাই অনুঘটকদের কথা বলছেন, কিন্তু নির্বাচন কমিশন কি বলল যে বিহারে SIR-এর সময় কত অনুঘটককে সরানো হয়েছে? তারা এখন এই সংখ্যা শেয়ার করতে পারত। অসমে তো নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে সেখানেও SIR ঘোষণা করা উচিত ছিল।
নতুন Hyundai Venue-তে একগুচ্ছ সেফটি ফিচার, থাকছে চারটি ডিস্ক ব্রেক
সামগ্রিকভাবে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।” তিওয়ারির এই মন্তব্য বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে, যা রাজ্যের আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, পুডুচেরি সহ ১২টি রাজ্য-কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত, যেখানে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু অসমকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন অধিকারী গিয়ানেশ কুমার ব্যাখ্যা করেছেন, “অসমে নাগরিকত্ব আইনের আলাদা বিধান রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে নাগরিকত্ব যাচাই প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।
তাই দ্বিতীয় পর্যায়ে অসম অন্তর্ভুক্ত নয়। পরবর্তীকালে অসমের জন্য আলাদা আদেশ জারি করা হবে।” এই ব্যাখ্যা সত্ত্বেও কংগ্রেস এটিকে ‘চয়নবাদী’ বলে অভিহিত করেছে। তিওয়ারি বলেন, “অসমে নির্বাচন কোণঠাসা হয়ে আসছে, তবু SIR করা হলো না। এটা কি বিজেপির সুবিধামতো? বিহারে অনুঘটকের কথা বলে ভোটার তালিকা ‘ক্লিন’ করা হলো, কিন্তু অসমে কেন এই নির্বাচন কমিশনের ‘অনুমতি’ নেই?”
এই বিতর্কে বিজেপি নেতারাও সাড়া দিয়েছেন। বিজেপি নেতা প্রতুল শাহ দেও বলেন, “SIR একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা নির্বাচনের অখণ্ডতা নিশ্চিত করে। নির্বাচন কমিশনের সততা অটুট, এবং বিরোধীরা এতে রাজনৈতিকতা যোগ করছে।” অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, যিনি বিজেপির নেতৃত্বে রাজ্য চালাচ্ছেন, এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের আজকের প্রেস কনফারেন্সে আমরা সচেতন। অসমে নাগরিকত্ব যাচাই চলছে, তাই SIR-এর প্রয়োজন নেই। এটা রাজ্যের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনের জন্য ভালো।” কিন্তু বিরোধীরা এটিকে ‘দ্বিমুখী নীতি’ বলে অভিযোগ করছেন।
আরজেডি নেতা মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি বলেন, “SIR-এর বিরোধিতা নেই, কিন্তু এটি নিরপেক্ষভাবে হতে হবে। বিহারে অনিয়ম দেখা গেছে, প্রমাণও দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে সরকারের পক্ষপাত না করার দাবি করেছে তারা।”


