“দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট” দিতে বাধ্য করা হচ্ছে! বিস্ফোরক ওআইসি

asaduddin-owaisi-speech-loyalty-discrimination-hyderabad-rally

হায়দরাবাদ: দেশের রাজনৈতিক বাতাবরণে উত্তাপের মধ্যেই আবারও আলোচনার কেন্দ্রে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। শনিবার এক জনসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি অভিযোগ করেন, দেশের মুসলমানদের বারবার “দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট” দিতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করছে। তাঁর বক্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা।

Advertisements

সভা মঞ্চ থেকে ওয়াইসি বলেন, “আমাদের প্রতি যারা গালমন্দ করে এবং দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট দাবি করে, তাদের বলি আমরা গতকালও অনেক কিছু সহ্য করেছি, আজও করছি, আগামীকালও হয়তো করতে হবে, কিন্তু আমরা কখনও আমাদের দেশকে ঘৃণা করিনি।

   

জন্মদিনে 7 কোটির গাড়ি উপহার পেলেন নার্গিস, কে দিল?

যারা মুসলমানদের দমন করে, তারাই ভারতের শক্তিকে দুর্বল করছে।” তাঁর দাবি, ভারত তখনই উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে যখন দেশ সমতার ভিত্তিতে সকল নাগরিককে দেখা হবে এবং কোনও সম্প্রদায়কে ঘৃণা বা বৈষম্যের মাধ্যমে পৃথকীকরণ করা হবে না।

ওয়াইসির বক্তব্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঘিরে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি অযোধ্যার বিতর্কিত জমি সংক্রান্ত ঐতিহাসিক মামলার রায় প্রসঙ্গে বলেন, “মসজিদ মামলার রায় আমাদের পক্ষে যায়নি। কিন্তু কোনও মুসলমান আদালতে গিয়ে কোনও বিচারপতিকে অপমান করেনি।

অথচ যিনি প্রকৃতপক্ষে আদালতে জুতো ছুড়েছিলেন, তাঁর বিষয়ে কিছু বলা হয় না কারণ তিনি সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের।” তাঁর দাবি, আইনি ব্যবস্থাকে সম্মান করা এবং বিরোধিতাকে সাংবিধানিক পথে মোকাবিলা করা এগুলিই মুসলিম সম্প্রদায় বরাবর করে এসেছে।

Advertisements

উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “ভারত আমাদের দেশ। আমরা দেশকে সবসময় ভালোবেসেছি, ভবিষ্যতেও ভালোবাসব। দেশকে ভালোবাসা মানে সরকারের সব সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত থাকা নয়। সমালোচনা গণতন্ত্রের অধিকার।”

ওয়াইসি বক্তব্যের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক বিতর্কের পটভূমিতে তাঁর বক্তব্য মুসলিম ভোটারদের উদ্দেশে একটি আবেগপ্রবণ বার্তা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে জাতিগত পরিচয়, ধর্মীয় বিরোধ, এবং সামাজিক বৈষম্য প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য আঞ্চলিক ও জাতীয় রাজনীতির নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিজেপির একাধিক মুখপাত্র যদিও ব্যক্তিগতভাবে প্রতিক্রিয়া না দিলেও তাঁদের মতে, দেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে সমান অধিকার দিয়েছে এবং বিচারব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক ভাষণ জাতিকে আরও বিভক্ত করতে পারে। অপরদিকে AIMIM সমর্থকরা দাবি করেছেন, ওয়াইসি কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন এবং বৈষম্যহীন সমাজ দাবি করেছেন।

তেলেঙ্গানা ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ে ওয়াইসির বক্তব্যের প্রভাব পড়বে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান। বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাক ভোটব্যাংক যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেখানে এই বক্তব্য নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।