Sunday, December 7, 2025
HomeWest BengalKolkata Cityভোটের প্রাক্কালে রাজনীতির ‘ধর্মযুদ্ধ’, গীতাপাঠের মঞ্চে রাজ্যপালও

ভোটের প্রাক্কালে রাজনীতির ‘ধর্মযুদ্ধ’, গীতাপাঠের মঞ্চে রাজ্যপালও

- Advertisement -

বঙ্গের মাটিতে ভক্তি, আধ্যাত্মিকতা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক বিরল সংমিশ্রণ দেখা গেল ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের বিশেষ অনুষ্ঠানে। বিশাল এই আয়োজন শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবেই নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনের কেন্দ্রেও পরিণত হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। তাঁর উপস্থিতি ও বক্তব্য অনুষ্ঠানে এক আলাদা মাত্রা যোগ করে।

মঞ্চে উঠে রাজ্যপাল গীতা থেকে মহাভারতের নানা প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি শুধু গ্রন্থ উদ্ধৃতিই করেননি, বরং মহাভারতের শিক্ষাকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে যুক্ত করে এক বিশেষ বার্তা তুলে ধরেছেন। রাজ্যপাল জানান, মহাভারতের সেই কঠিন সময়ে শ্রীকৃষ্ণ যেমন অর্জুনকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছিলেন, ঠিক তেমনই যে কোনও সমাজ বা রাষ্ট্রকে উত্তরের পথে এগিয়ে যেতে আলোকের দরকার হয়। তিনি স্মরণ করান, অর্জুন যখন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের কর্তব্য ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের মাঝে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন, তখন শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে বলেছিলেন— *“কর্ম করে যাও, ফলের দিকে তাকিও না।” রাজ্যপাল বক্তব্যে সেই উদ্ধৃতি নতুন করে উচ্চারণ করেন এবং বলেন যে এই বাণী আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তিনি মন্তব্য করেন যে, “শ্রীকৃষ্ণ বারবার অর্জুনকে বলেছিলেন কর্ম করে যাও অর্জুন। আর আজ বাংলা কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।”

   

এই বক্তব্য উপস্থিত দর্শকদের মাঝে আলোচনার নতুন দিক খুলে দেয়। অনেকেই মনে করেন, তিনি বাংলার মানবিক শক্তি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং কাজের ক্ষমতা সম্পর্কে আশাবাদী বার্তা দিয়েছেন। অন্যদিকে, তাঁর বক্তব্যের মধ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরাসরি সুর চড়ানোও চোখে পড়েছে। রাজ্যপাল জানান, আজকের সমাজে ভ্রষ্টাচার, অন্যায় এবং নৈতিক দুর্বলতা যেভাবে বাড়ছে, তা রুখতে হলে গীতার বাণী প্রাসঙ্গিক। তিনি স্পষ্ট বলেন, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য ধার্মিক মূল্যবোধ এবং মানবিক শক্তি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে। এজন্যই তিনি গীতার শিক্ষাকে আধুনিক সামাজিক কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের বক্তব্যের পাশাপাশি ৫ লক্ষ মানুষের একযোগে গীতাপাঠের দৃশ্য ছিল অনন্য। চারদিকে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল গীতার শ্লোক—শান্ত, তপস্যাময়, আধ্যাত্মিক এক পরিবেশ সৃষ্টি করে। নারী-পুরুষ, বিভিন্ন বয়সের মানুষ এক হয়ে এই বিশাল আয়োজনকে সফল করেন। অনেকে বলেন, এমন দৃশ্য জীবনে একবারই দেখা যায়—সংখ্যায় এত মানুষ, কিন্তু হৃদয়ে একটাই অনুভূতি।

অনুষ্ঠানে গীতাপাঠের মাধ্যমে যে ঐক্যের ছবি ফুটে উঠেছিল, তা বাংলার বহুদিনের সংস্কৃতিকে আবার সামনে নিয়ে আসে। গীতাপাঠকে কেন্দ্র করে নানা সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং হাজার হাজার সাধারণ মানুষ একত্র হয়েছিলেন।

 

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular