রিভিশনে ছাড় নেই, সারা বছর কড়া নিয়ম, বার্তা নির্বাচন কমিশনের

Applications for Adding Names to Voter List Accepted Post Draft Release

ভারতে ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত। ২৩ বছর পর বাংলায় যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন sir রিভিশন (সার) চালু হয়েছে, তা সেই নিয়মের ধারাবাহিকতাকে আরও দৃঢ় করছে। ভোটার তালিকা থেকে মৃত, ভূতুড়ে, বিদেশি নাগরিক বা একাধিক কেন্দ্রে (Election Commission) একই নাম থাকা ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং সঠিকতা বৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জিত হবে।

Advertisements

ভোটার তালিকা সংশোধনের এই বিশেষ অভিযান বাংলায় প্রথম নয়, দেশের আরও ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও একই সঙ্গে চলেছে। এটি প্রমাণ করে যে, ভারতের নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার যথাযথতা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তা সারা দেশে মানসম্মতভাবে কার্যকর হচ্ছে। সাধারণ রিভিশন বছরের নির্দিষ্ট সময়ে হলেও চলতে থাকে, তবে ‘সার’-এর মতো বিশেষ ইনটেনসিভ রিভিশনের মাধ্যমে মৃত বা ভূতুড়ে ভোটারদের নাম বাতিল করার কাজ আরও সংগঠিত ও কড়াভাবে করা সম্ভব হয়।

   

SIR  কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হল ভোটার তালিকার মান উন্নয়ন। দীর্ঘদিন ধরে ভোটার তালিকায় নাম বেঁচে থাকা মৃত ব্যক্তি, ভূতুড়ে ভোটার এবং বিদেশি নাগরিকদের নাম থাকায় নির্বাচনে ন্যায়বিচার প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে একাধিক কেন্দ্রে একই নাম থাকা বা তথ্য বিভ্রান্তিকর নাম থাকলে ভোটার শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। এই সমস্যাগুলো রোধ করতে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন কার্যক্রম অপরিহার্য। তবে, এই উদ্যোগ সত্ত্বেও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ‘সার’-এর পরও যাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তারা কি ভবিষ্যতে আবার ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে পারবে না? কারণ, ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন বা বিয়োজন সারা বছর ধরে চলতে থাকে। নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যদিও ‘সার’-এর মাধ্যমে এক বিশেষ পর্যায়ে মৃত বা ভূতুড়ে ভোটারদের নাম বাতিল করা হয়, তবে নিয়মিত রিভিশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন আবেদন আসলে তা যাচাই-বাছাই করে তালিকায় পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। অর্থাৎ নিয়মের ফাঁক থাকলেও তা নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং যাচাই করে সম্পন্ন করা হয়।

ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ‘সার’ কার্যক্রমের কড়া নজরদারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি আবেদন যাচাই করা হয়, প্রমাণপত্রের ভিত্তিতে মৃত বা ভূতুড়ে ভোটার শনাক্ত করা হয় এবং বিদেশি নাগরিকের নাম বাতিল করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচনী অফিসাররা মাঠে গিয়ে সরাসরি যাচাই-বাছাই করেন। এর ফলে ভোটার তালিকার নির্ভুলতা বৃদ্ধি পায় এবং ভোটারের সঠিকতা নিশ্চিত হয়।

সার কার্যক্রমের মাধ্যমে শুধুমাত্র মৃত বা ভূতুড়ে ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় না, একই সঙ্গে ভোটার তালিকার তথ্য হালনাগাদ করা হয়। নতুন ভোটার যোগ করা, নামের বানান ঠিক করা, ঠিকানা সংশোধন করা—এসব কাজও বিশেষ মনোযোগের সঙ্গে করা হয়। এর ফলে ভোটাররা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সঠিক তথ্য নিশ্চিতভাবে পান।

Advertisements

বিশেষ নিবিড় রিভিশনের মাধ্যমে ভোটার তালিকার সঠিকতা বজায় রাখা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এটি ভোটের ফলাফলে স্বচ্ছতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করে। পাশাপাশি, ভোটারদের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি পায় যে, নির্বাচন সুষ্ঠু এবং প্রতিটি ভোট গণ্য হবে।