নবান্ন বৈঠকের প্রাক্কালে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কুণাল, পাল্টা প্রতিক্রিয়া কিঞ্জলের

ফের সমাজমাধ্যমে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের নিশানা করে কড়া ভাষায় ঠুকলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। পাল্টা কুণাল ঘোষকে এর উত্তরও ফিরিয়ে দিলেন জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ…

Ahead of the Nabanna meeting, Kunal and Kinjal got involved in a heated debate.

ফের সমাজমাধ্যমে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের নিশানা করে কড়া ভাষায় ঠুকলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। পাল্টা কুণাল ঘোষকে এর উত্তরও ফিরিয়ে দিলেন জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ (Kunal Ghosh And Kinjal Nanda)। সম্প্রতি দীর্ঘদিন ধরে অনশন চালিয়ে যাওয়া আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।

তবে এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের প্রশংসা করে বামেদের দিকে কটাক্ষের তীরও ছুঁড়েছিলেন তিনি। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার জুনিয়র চিকিৎসকদের ফের কটাক্ষ করলেন তৃণমূল নেতা। কী পোস্ট করেছেন কুণাল ঘোষ? সোমবার নবান্ন বৈঠকের ঠিক আগে সকালবেলা আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তৃণমূল নেতা।

   

সেখানে কুণাল লিখেছেন, “যদি মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠক পরিকল্পিতভাবে অন্যায্য জেদে ভেস্তে দিয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ধর্মঘটের নামে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হয়, তাহলে বাংলার কোনো রোগীর কোনো ক্ষতি হলে নিকটবর্তী থানায় ডাঃ দেবাশিস হালদার ও ডাঃ অনিকেত মাহাতোর নামে যেন FIR হয়। তাঁরাই চক্রান্তের মাতব্বর। তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকের নাম যোগ করবেন।

চিকিৎসা আপনার মৌলিক অধিকার। প্ররোচনা দিয়ে তা থেকে বঞ্চিত কার আইনত অপরাধ। অনশনের কারণে যদি জুনিয়রদের কারুর কোনো ক্ষতি হয়, তাহলেও মূলত এরা দুজন, এদের প্ররোচনাদাতারা দায়ী থাকবে।” সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে বিরোধীদের নিশানা করে তিনি আরও লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী বারবার অভিভাবকোচিত সংবেদনশীলতা দেখাচ্ছেন। তাতে সাড়া দিয়ে অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনা হোক। বাম, অতি বাম, বিরোধীদের ফাঁদে পা দেবেন না।”

আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকের আক্রমণ করার কিছুক্ষণ পর কুণাল ঘোষকে পাল্টা উত্তর দিলেন আরেক আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ। তিনি এর প্রত্যুত্তরে ফেসবুকে লিখেছেন, “সিদ্ধান্ত শুধু অনিকেত বা দেবাশিস হালদার নেয় নি,সিদ্ধান্ত WBJDF নিয়েছে। Day 1 থেকে আমরা আলোচনায় বসতে চেয়েছিলাম,কিন্তু উৎসব চলায় সেটা সম্ভব হয়নি। আর meeting ভেস্তে দেওয়ার কথা যদি বলেন, অনশনে বসার আগে 2 বার mail করা হয়েছিল, যার উত্তর দিতেই আপনারা ভুলে যান।

তাই সমস্যা সমাধান করার সদিচ্ছের প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। যেচে পড়ে কেউ আন্দোলন করতে আসে না, ডাক্তারিতে অনেক কাজ থাকে। যাই হোক, ডাক্তার না হলে সেটা বোঝানো খুব মুশকিল। ব্যক্তি আক্রমণটা স্বভাব হয়ে গেছে।” প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা সহ নিজেদের ১০ দফা দাবি পূরণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ধর্মতলায় আমরণ অনশন চালাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কিন্তু এতদিন ধরে কোন সাড়া না মিললেও অবশেষে শনিবার অনশনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব ও মুখ্যসচিব।

সেখানে ফোনালাপে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ফের তাদের ১০ দফা দাবির কথা শোনেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মুখ্যমন্ত্রী সোমবার নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকে বসার আহ্বান জানান। তবে নবান্ন থেকে অনশন উঠিয়ে সেই বৈঠকে আসার নির্দেশ দেওয়া হলে সেই নির্দেশ মানতে চাননি জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অনশন জারি রেখেই তাঁরা সোমবার নবান্নে বৈঠকে বসবেন। তবে আজকের বৈঠকে বরফ গলে দু-পক্ষই মধ্যস্থতায় আসতে পারে কিনা এবার সেটাই দেখার।