পরীক্ষা বাতিলের প্রতিবাদে কলেজস্ট্রিটে এবিভিপির প্রতিবাদ

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (ABVP Protest) প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা বাতিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ স্ট্রিটে প্রতিবাদে নেমেছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। Advertisements…

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (ABVP Protest) প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা বাতিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ স্ট্রিটে প্রতিবাদে নেমেছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)।

Advertisements

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ আগস্ট পরীক্ষা বাতিল করার বিরুদ্ধে, ছাত্র সমাবেশে সাংবাদিকের উপর হেনস্থার প্রতিবাদে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্রেট কালচার রুখে দিতে ও ছাত্র নির্বাচন ও ভর্তি বন্ধ করে শিক্ষার বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে এবিভিপির বিক্ষোভ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চলছে কলেজ স্ট্রিটে।

Advertisements

এই ঘটনার পাশাপাশি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা অভিরূপ চক্রবর্তীর উপাচার্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং তাঁকে অপমান করার অভিযোগে এবিভিপি অপমানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ স্ট্রিটে তাদের বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এছাড়াও ২০০৭ থেকে কলেজে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ নিয়েও সরব হয়েছে এবিভিপি।

এবিভিপির অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের কারণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে, যার ফলে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে তারা শিক্ষার প্রতি অবমাননা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা বলে উল্লেখ করেছে।

এবিভিপির প্রতিবাদকারীরা বলেন, “পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের জন্য পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া অগ্রহণযোগ্য। এছাড়া, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিরূপ চক্রবর্তীর আপত্তিকর মন্তব্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদার উপর আঘাত।

আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অপমানকারীদের শাস্তির দাবি করছি।”তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর ধর্মতলার মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই বছরও এই সমাবেশে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

এই সমাবেশের প্রস্তুতির জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা এবিভিপির বিক্ষোভের মূল কারণ। প্রতিবাদকারীদের মতে , “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। উপাচার্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা শিক্ষার পরিবেশকে বিষাক্ত করছে। আমরা এই ধরনের অপমানজনক আচরণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছি।”

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য।

উপাচার্যের প্রতি অপমানজনক মন্তব্য শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি অশ্রদ্ধা।” তিনি আরও বলেন, “যতদিন এই ধরনের নেতারা ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে থাকবেন, ততদিন শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

বিক্ষোভকারীরা কালো প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার নিয়ে কলেজ স্ট্রিটে মিছিল শুরু করেছে। এই মিছিলে তারা উপাচার্যের প্রতি অপমানজনক মন্তব্যের জন্য অভিরূপ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিষয়টিকে নতুন করে সামনে এনেছে।

শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর রাজনৈতিক চাপ শিক্ষার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। একজন প্রাক্তন অধ্যাপক বলেন, “পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক সংগঠনের হস্তক্ষেপ বন্ধ হওয়া উচিত। উপাচার্যের প্রতি অপমানজনক মন্তব্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে।”

আড়াই কোটিতে বিক্রি কিংবদন্তি ক্রিকেটারের টুপি, স্থান পেল জাদুঘরে

এই বিতর্ক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। অনেক ছাত্র-ছাত্রী মনে করছেন, পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত তাদের একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে, এই বিতর্ক ভবিষ্যতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে আরও আলোচনার সূত্রপাত করতে পারে।