অভিষেকের ‘আমি ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচি নিয়ে উচ্ছ্বাস কুণালের

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আমি ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচি নিয়ে কুনাল ঘোষের উচ্ছ্বাস TMC leader Kunal Ghosh

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষিত ‘আমি ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচিকে সময়োপযোগী এবং যুগান্তকারী বলে আখ্যা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। রবিবার নিজের এক্স (Twitter) পোস্টে কুনাল ঘোষ লিখেছেন, এই কর্মসূচি শুধু তৃণমূল কংগ্রেসকেই নয়, বাংলাকে ভালোবাসা বিপুল সংখ্যক মানুষকে বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করবে।

Advertisements

তিনি বলেন, বিজেপি ও সিপিএমসহ বিরোধী শিবির যেখানে কুৎসা, অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তি ছড়াতে ব্যস্ত, সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নতুন উদ্যোগ আরও সংগঠিত ও ইতিবাচক জবাব দেবে। কুনাল ঘোষের ভাষায়, “অভিষেকের এই কর্মসূচি সঠিকভাবে এগোলে কে কোন সংবাদপত্রে কী লিখল বা কোন চ্যানেল কী দেখাল, তা নিয়ে মাথা ঘামানোর আর প্রয়োজন হবে না। তৃণমূল নিজের আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক প্রচার কাঠামোর উপর দাঁড়াবে।”

ডিজিটাল যুগে নতুন পদক্ষেপ

রাজনীতির মাঠ এখন আর শুধু সভা-মিছিল বা দেওয়াল লিখনে সীমাবদ্ধ নেই। সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে উপস্থিতি এখন রাজনৈতিক দলগুলির অন্যতম বড় শক্তি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রেক্ষাপটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “আমি ডিজিটাল যোদ্ধা” কর্মসূচি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

তৃণমূলের উদ্দেশ্য স্পষ্ট— ডিজিটাল মাধ্যমে বিরোধীদের প্রোপাগান্ডার পাল্টা দেওয়া, একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম, যারা সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে প্রতিদিন যুক্ত থাকে, তাদের সম্পৃক্ত করাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

কুনাল ঘোষের ব্যক্তিগত অংশগ্রহণ

নিজের পোস্টে কুনাল ঘোষ আরও জানান, তিনি ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচির ফর্ম ফিলআপ করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্য সহযোদ্ধারাও এই উদ্যোগে সামিল হবেন। তাঁর মতে, ডিজিটাল প্রজন্মকে সঙ্গে না নিলে রাজনীতির আসল লড়াই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

তিনি আরও বলেন, “তৃণমূলের কাজ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যের যে উন্নয়ন হয়েছে, তা মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে হবে। বিরোধীদের ভুয়ো খবর ও গুজবের জবাব দিতে হবে যুক্তি দিয়ে, তথ্য দিয়ে। অভিষেকের ডিজিটাল যোদ্ধা কর্মসূচি ঠিক সেটাই করবে।”

Advertisements

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া

রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপি শিবিরের একাংশ দাবি করছে, তৃণমূল এই কর্মসূচির মাধ্যমে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে। আবার সিপিএম বলছে, শাসকদল এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে “ডিজিটাল দাপট” দেখাতে চাইছে। তবে তৃণমূলের বক্তব্য, এটি মূলত জনগণকে সচেতন করার এবং গুজব ঠেকানোর একটি ইতিবাচক উদ্যোগ।

ভবিষ্যতের ইঙ্গিত

রাজনীতির ময়দানে প্রযুক্তির গুরুত্ব আগামিদিনে আরও বাড়বে। বিশেষত ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডিজিটাল প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন এবং অনলাইন রাজনৈতিক বার্তা হবে অন্যতম বড় অস্ত্র। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “আমি ডিজিটাল যোদ্ধা” কর্মসূচি তৃণমূলকে এই লড়াইয়ে এক ধাপ এগিয়ে রাখবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।

সব মিলিয়ে, কুনাল ঘোষের উচ্ছ্বাস স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে তৃণমূল এই কর্মসূচিকে আগামী দিনের রাজনৈতিক রণনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে দেখছে। এখন দেখার বিষয়—কীভাবে এই ডিজিটাল যোদ্ধাদের দল মাঠে নেমে বিরোধীদের কুৎসার পাল্টা দেয় এবং বাংলার মানুষের কাছে নতুন বার্তা পৌঁছে দেয়।