২০২৩ জুড়ে তৃণমূল মন্ত্রীদের টাকার পাহাড় দেখলেন রাজ্যবাসী। এমনটা এ রাজ্যে গত বামফ্রন্ট জমানায় কেউ দেখেননি। টাকা উদ্ধারের এই দৃশ্যের মধ্যেই একটা বছর কাটল। গত বছরে শুধুমাত্র নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূলের বিধায়কসহ কালীঘাট ঘনিষ্ঠ গ্রেফতার হয়েছেন ১৮ জন। পুরসভায় অবৈধ নিয়োগ, রেশনে দুর্নীতিতে বারবার বিপুল সম্পত্তির হদিস মিলেছে।
শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে আগেই জেলে গেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবার ২০২৩ সালে মন্ত্রী থাকাকালীন রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। প্রবল চাপের মুখে তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্নীতির তদন্তে গ্রেফতার হন আরও বিধায়ক ও ঘনিষ্ঠরা। ২০২৩ বছর জুড়ে মুর্শিদাবাদ জেলার তিন তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে কখনও সিবিআই, কখনও আয়কর তল্লাশিতে উদ্ধার হয়েছে টাকার পাহাড়।
জ্যোতিপ্রিয়র মতো হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার গ্রেফতারির থেকেও রোমাঞ্চকর ঘটনা ছিল মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার রকমসকম। বাড়িতে তল্লাশির আগে তিনি পাঁচিল ডিঙিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ধরা পড়েন। গ্রেফতারির ভয়ে পাঁচিল থেকে বিধায়কের ঝুলতে থাকা দৃশ্য দেখে দেশজোড়া শোরগোল পড়েছিল। গ্রেফতারির আগে মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। সেই মোবাইল উদ্ধারে পুকুরের সব জল ফেলে পাঁকের মধ্যে তল্লাশি চালানো হয়েছিল।
গত বছরে মমতা ব্যানার্জির মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য ও জঙ্গীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়ি, অফিস, চালকল থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদে মোট ১১ কোটি টাকা। তিনি দাবি করেছিলেন ব্যবসার টাকা।
গত ৩০ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেকের ঘনিষ্ঠ ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়ির শৌচালয় ও বেডরুম থেকে উদ্ধার হয় ২৮ লক্ষ টাকা।
গত ২১ ডিসেম্বর নগদ ৭০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয় সাগরদিঘির তৃণমূল বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসের বাড়ি থেকে। তিনি কংগ্রেস ও বাম জোটের হয়ে উপনির্বাচনে জিতলেও পরে অভিষেকের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন।
নতুন বছর ২০২৪ সালেও কি টাকার পাহাড় দেখা যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে উঠে আসছে, যেহেতু রাজ্যে একাধিক দুর্নীতির তদন্ত চলছে তাই ইডি-সিবিআই-আয়কর তল্লাশি জারি থাকবে। রাজ্যবাসীর বড় অংশের ধারণা, সেক্ষেত্রে আরও টাকার পাহাড় দেখতে পাওয়া যাবে।